২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে দেশের আঞ্চলিক দলগুলির আয় কমল তার আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৪২ শতাংশ। দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের কাছে আয়-ব্যয়ের যে হিসেব জমা দিয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) বৃহস্পতিবার একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
এডিআর-এর এই রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩৪ টি আঞ্চলিক দলের ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরের আয় আগের আর্থিক বছরের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে ৩৪ টি দলের মোট আয় ছিল ৪০৯ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ, আগের আর্থিক বছরের চেয়ে আঞ্চলিক দলগুলির আয় ২০১৭-১৮ বছরে কমেছে ৪২ শতাংশ।
২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে দেশের আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনুদান পেয়েছে সমাজবাদী পার্টি (এসপি)। ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে অখিলেশ যাদবের দলের মোট আয় ৪৭ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা। দেশের ৪৮ টি আঞ্চলিক দলের মধ্যে ৩৭ টি দল তাদের বার্ষিক আয়ের তথ্য পেশ করেছে নির্বাচন কমিশনের কাছে।
এডিআর-এর রিপোর্টে প্রকাশ, ২০১৭-১৮ আর্থিক বর্ষে ৩৭ টি আঞ্চলিক দলের মোট আয় ২৩৭ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে সমাজবাদী পার্টির আয় ৪৭ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা। এরপরে রয়েছে তামিলনাড়ুর দ্রাবিড় মুন্নেত্রা কাঝাগাম বা ডিএমকে দল। এমকে স্ট্যালিনের দলের ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে আয় ৩৫ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা এবং আয়ের নিরিখে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কেসিআর-এর দল তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি বা টিআরএস। সংশ্লিষ্ট আর্থিক বছরে তাদের আয় ২৭ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা। ৩৭ টি আঞ্চলিক দলের মোট আয়ের ৪৬.৪৫ শতাংশ আয় করেছে এই তিনটি দল।
এডিআর-এর রিপোর্ট বলছে, এই ৩৭ টি আঞ্চলিক দল তাদের আয়ের (২৩৭ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা) মধ্যে ৭৭ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা (৩২.৫৮ শতাংশ) পেয়েছে দান থেকে। আর ৮৬ কোটি ৬ লক্ষ টাকা বা ৩৬.৫০ শতাংশ অর্থ তারা আয় করেছে সদস্য চাঁদা থেকে। একমাত্র কর্ণাটকের জেডিএস নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে, মোট আয়ের ৬ কোটি ৩ লক্ষ টাকা তারা পেয়েছে ইলেক্টোরাল বন্ড থেকে।
অন্যদিকে, ১১ টি আঞ্চলিক দল তাদের আয়ের হিসেব দেয়নি নির্বাচন কমিশনকে। উত্তর-পূর্বের ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি (ইউডিপি) ও জম্মু কাশ্মীর ন্যাশনাল পান্থার্স পার্টি বিগত ১৩ বছরের বেশি সময় তাদের আয়ের হিসেব দেয়নি নির্বাচন কমিশনকে। যদিও ২০১৩ সালের ১৩ ই সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, তথ্যের অধিকার আইনের ভিত্তিতে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকে প্রতি আর্থিক বর্ষে অনুদানের হিসেব দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। ২০ হাজার টাকার ওপরে কোনও অনুদানের ক্ষেত্রে অনুদানকারীর পরিচয় জানাতে হবে।
Comments