হরিয়ানায় বিজেপির প্রায় সব মন্ত্রীর হার, পর্যুদস্ত কুস্তিগীর ববিতা ফোগত, যোগেশ্বর দত্তরা

প্রকাশিত হয়েছে মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানা বিধানসভা ভোটের ফল। মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিবসেনা জোট ক্ষমতা দখল করলেও, বিজেপি শিবিরের মাথাব্যথা বাড়িয়েছে হরিয়ানা। এখনও যা পরিস্থিতি তাতে বিজেপিই সবচেয়ে বড় দল। কিন্তু সমস্যা অন্যত্র।

বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী এম এল খট্টর এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য পরিচিত অনিল ভিজ জিতেছেন। খট্টর মন্ত্রিসভার বাকি সমস্ত মন্ত্রীকেই হারের মুখ দেখতে হচ্ছে। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গীন যে গণনা চলাকালীনই হরিয়ানার বিজেপি সভাপতিকে পদ থেকে ইস্তফা পর্যন্ত দিতে হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, বিজেপি যেসমস্ত তারকা প্রার্থীদের এবার ভোটের ময়দানে নামিয়েছিল, হরিয়ানার মানুষ তাঁদেরও কার্যত ছুঁড়ে ফেলেছেন।

যে হরিয়ানায় অর্ধেকের বেশি আসন পাওয়ার ব্যাপারে গতকালও নিশ্চিত ছিলেন বিজেপি নেতারা, গণনা শুরু হতেই কেন এভাবে বদলে গেল চিত্র? প্রাথমিকভাবে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ৩৭০ এবং এনআরসি ইস্যুতে ধুঁয়াধার প্রচার করে হরিয়ানা দখলে রাখার যে পরিকল্পনা বিজেপি নিয়েছিল, ভোটের ফলে তা ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে গেরুয়া শিবিরে। তাঁদের একাংশের মত, স্থানীয় ইস্যুকে এড়িয়ে জাতীয় ইস্যুর আধিক্যই এবার জোর ধাক্কা দিল বিজেপিকে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হরিয়ানায় খট্টর মন্ত্রিসভার ৭ জন, বিজেপির রাজ্য সভাপতি, বিধানসভার স্পিকার, সকলেই বিপুল ভোটে হেরেছেন। এছাড়া বিজেপির ভিআইপি প্রার্থী টিকটক স্টার সোনালী ফোগত আদমপুর কেন্দ্রে প্রায় ৩০ হাজার ভোটে হেরেছেন কংগ্রেসের কুলদীপ সিংহ বিষ্ণোইয়ের কাছে। হরিয়ানায় বিজেপি যে ৩ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্বকে ভোটে দাঁড় করিয়েছিল, তাদের মধ্যে চারখি দাদরি কেন্দ্রে হেরেছেন কুস্তি ক্যুইন ববিতা ফোগত। অন্যদিকে হেরেছেন আরেক রেসলার যোগেশ্বর দত্তও। একমাত্র হকি তারকা সন্দীপ সিংহ জয় পেয়েছেন।

দলের এই অবস্থা হল কীভাবে, তা জানতে গণনা চলাকালীনই দিল্লিতে ডাক পড়ে মুখ্যমন্ত্রী খট্টরের। সেখানে তাঁর সঙ্গে বৈঠকের জন্য আইটিবিপির নির্ধারিত অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ বিজেপির সদর দফতরে ফলের বিশ্লেষণে বসবেন বলে জানা গিয়েছে।

তবে সরকার গড়তে মরিয়া বিজেপি কিংমেকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ জেজেপির দ্বারস্থ হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে সূত্রের খবর। এদিকে বিজেপির এই প্রচেষ্টার আগেই কংগ্রেসের ভুপিন্দর সিংহ হুডা, হরিয়ানার জনাদেশকে বিজেপি বিরোধী বলে দাবি করে সমস্ত বিজেপি বিরোধী দলকে একজোট হয়ে সরকার গড়ার নিমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছেন। ফলে বিজেপির কাছে খেলা আরও জটিল হয়ে উঠছে বলাই বাহুল্য।

অন্যদিকে মহারাষ্ট্রও একাধিক তারকা পতনের সাক্ষী হল। হেরেছেন হেভিওয়েট বিজেপি প্রার্থী পঙ্কজা মুণ্ডে। পারলি কেন্দ্রে পঙ্কজা মুণ্ডে প্রায় ৩০ হাজার ভোটে হার স্বীকার করেন তাঁরই তুতো ভাই এনসিপি প্রার্থী ধনঞ্জয় মুণ্ডের কাছে। গণনার শুরুতে পিছিয়ে ছিলেন বিজেপির মহারাষ্ট্রের সভাপতি চন্দ্রকান্ত পাটিলও। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি বিরোধীদের সর্বসম্মত প্রার্থী এমএনএসের কিশোর শিণ্ডেকে ২৬ হাজার ভোটে পরাজিত করেছেন।

Comments are closed.