রাফাল চুক্তি ঘোষণার দু’সপ্তাহ আগে ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অফিসারদের সঙ্গে মিটিং করেন অনিল আম্বানীঃ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

একদিকে যখন রাফাল ডিল নিয়ে কেন্দ্রকে লাগাতার আক্রমণ শানাচ্ছে বিরোধী দলগুলি, অভিযোগ উঠছে অনিল আম্বানীর রিলায়েন্স সংস্থাকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে যুদ্ধ বিমান তৈরির বরাত পাইয়ে দিয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী, তখনই কেন্দ্রের অস্বস্তি বাড়ল এক নতুন তথ্যে।
ইংরেজি সংবাদমাধ্যম, ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এ প্রকাশ, ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রীর রাফাল চুক্তি ঘোষণার সপ্তাহ দুই আগে ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অফিসারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন অনিল আম্বানী।
১২ ই ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ এ প্রকাশ, ২০১৫ সালে এপ্রিল মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে রাফাল চুক্তি ঘোষণার দিন পনেরো আগে রিলায়েন্সের কর্ণধার অনিল আম্বানী তৎকালীন ফরাসি প্রতিরক্ষামন্ত্রী জঁ ভেঁস ল ড্রিয়ানসের অফিসে গিয়ে সে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অফিসারদের সঙ্গে মিটিং করেন বলে দাবি ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ সংবাদমাধ্যমের।
‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন ফরাসি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উপদেষ্টা জঁ ক্লদ মঁলে, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর শিল্প উপদেষ্টা ক্রিস্টফ সালোমন, প্রযুক্তিগত বিষয়ের উপদেষ্টা জিওফ্রে বকেট।
আম্বানীর সঙ্গে ওই মিটিং-এ কমার্শিয়াল ও ডিফেন্স হেলিকপ্টারের চুক্তি নিয়ে কথা হয় বলে জানা গিয়েছে ইংরেজি সংবাদ মাধ্যম,’দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’এর রিপোর্টের ভিত্তিতে। ওই মিটিংয়ে তাঁদের মধ্যে মৌ চুক্তি সাক্ষর করারও আলোচনা চলে বলে দাবি।
‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এ প্রকাশ এর কয়েকদিন পরই, ২০১৫ সালের ৯ থেকে ১১ই এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফ্রান্স সফর ছিল। সেই সফরের সময়ও ফ্রান্সে গিয়েছিলেন অনিল আম্বানী।
‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর এই রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর প্রশ্ন উঠছে, প্রধানমন্ত্রী সফরের আগেই ভারতীয় শিল্পপতি কেন আলোচনায় বসলেন ফরাসি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তৎকালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ওঁলাদ এক যৌথ বিবৃতিতে রাফাল ডিল ঘোষণা করেন। চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধ বিমান তৈরি করতে অনিল আম্বানীর সংস্থা অফসেট পার্টনার হিসেবে কাজ করবে।
গত বছর এই বিতর্ক নতুন মাত্রা পায় যখন তৎকালীন ফরাসি রাষ্ট্রপতি ওঁলাদ জানান, এই চুক্তিতে অফসেট পার্টনার হিসেবে একমাত্র আম্বানীর সংস্থার নামই ভারতের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল। তাদের বেছে নেওয়া ছাড়া ফরাসি সরকারের কিছু করার ছিল না। এরপরই বিরোধীরা রাফাল চুক্তিতে অনিল আম্বানীকে সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনে মোদীর বিরুদ্ধে। বিরোধী দলগুলির দাবি, যুদ্ধ বিমান তৈরির অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও আম্বানীর সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।

Comments are closed.