সিএএ বিরোধী প্রস্তাব আসতে চলেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ক্রমেই চাপ বাড়ছে কেন্দ্রের

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। যা নিয়ে যথেষ্ট চাপে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এবার কি তার আঁচ পড়তে চলেছে বিদেশেও? সূত্রের খবর, ওই বিতর্কিত আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আসতে চলেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে।

বিরোধীদের দাবি, এই আইনে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগাভাগি করে যেভাবে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তা সংবিধানের পরিপন্থী। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে যেহেতু বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে আগত মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা নেই, তাই এই আইনকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তী সময়ে বহু মানুষকে অনুপ্রবেশকারী তকমা দিয়ে বার করে দেওয়া হতে পারে বা ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হতে পারে। এই আশঙ্কায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ আরও দানা বাঁধছে। যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন, এই আইন নিয়ে এক ইঞ্চিও পিছু হঠবে না সরকার। ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই আইন বলবতের কথাও জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র।
এবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোতেও দানা বাঁধছে বিতর্ক। সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহেই ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ১৫৪ জন সদস্য একটি সম্মিলিত প্রস্তাব আনছেন কাশ্মীর এবং বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে। ইউরোপীয় নেতাদের মতে, এই আইনের ফলে বিশ্বের ইতিহাসে বৃহত্তম সংখ্যক মানুষ দেশছাড়া হতে পারেন। নিদারুণ কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে তাঁদের।
আগামী সপ্তাহে ব্রাসেলসে বসতে চলেছে ইউরোপীয় সংসদের প্লেনারি অধিবেশন। সেখানেই এই প্রস্তাব আনা হতে পারে বলে খবর। এই প্রস্তাবে নয়া আইনকে বৈষম্যমূলক, ভয়ানক বিভেদমূলক এবং আন্তর্জাতিক নীতি ও রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার নীতির পরিপন্থী বলে উল্লেখ করা হতে পারে।

সত্যিই যদি এমন প্রস্তাব ইউরোপীয় পার্লামেন্টে আনা হয়, তার প্রভাব পড়তে পারে ভারতের সঙ্গে ইউরোপের দেশগুলোর সম্পর্কে। এ বিষয়ে অবশ্য বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।

ইতিমধ্যেই এই আইনের বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশে ২১ জন মানুষের প্রাণ গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে কর্ণাটকে, অসমেও। এছাড়াও দেশজুড়ে চলছে দমন-পীড়ন। এর বিরুদ্ধেও ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাব আনা হতে পারে।

Comments are closed.