Assam NRC: ওয়েবসাইট থেকে রাতারাতি উধাও লক্ষ লক্ষ নাগরিকপঞ্জির তথ্য, রহস্য কী জানতে চেয়ে চিঠি বিরোধী দলনেতার

রাজধানী দিল্লির ভোট মিটতে না মিটতেই ফের শিরোনামে অসম। এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অসমে চলা নাগরিকপঞ্জির তথ্যই উধাও হয়ে গেল সরকারি ওয়েবসাইট থেকে।

যা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বেধেছে। সেনসাস কমিশনার ও রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন অসমের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত সইকিয়া।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অসম এনআরসির কাজ চলছিল। সেই কাজের দেখাশোনার ভার ছিল প্রতীক হাজেলার উপর। কিন্তু আচমকাই হাজেলাকে অসম থেকে বদলির নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। অভিযোগ, তারপর থেকেই গোলমালের শুরু।

আরও জানতে ক্লিক করুন, নাগরিকত্ব প্রমাণে অসমের মানুষের খরচ ৮ হাজার কোটি!

সূত্রের খবর, অসমের ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অফ সিটিজেনস বা এনআরসির অনলাইন ডেটা, যাতে কাদের নাম বাদ গিয়েছে এবং কাদের নাম নথিভুক্ত হয়েছে তার হিসেব থাকে, তা এনআরসির ওয়েবসাইটে আর পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছর অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই সেই তথ্য ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ্যে আনা হয়।

অনলাইন ডেটা রাতারাতি ভ্যানিশ হয়ে যাওয়াকে রহস্যময় আখ্যা দিয়ে অসমের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত সইকিয়া তদন্তের দাবি জানিয়ে কড়া চিঠি দিয়েছেন সেনসাস কমিশনার এবং দেশের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে।

চিঠির নির্যাস, এনআরসি কর্তৃপক্ষের ইচ্ছেকৃত ঢিলেমির কারণে যখন আপিল প্রসেস বা আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হতে দেরি হচ্ছে, ঠিক তখন তথ্য উধাও হয়ে গেল। এটা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরিপন্থী তো বটেই পাশাপাশি এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা তা নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন আছে।

আরও জানতে ক্লিক করুন, নথিতে সামান্য গরমিলে অসম এনআরসিতে নাম বাদ বহু মানুষের

রাজ্যের বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, অসম এনআরসিতে নাক কাটার পর বিজেপি মরিয়া হয়ে উঠেছে তালিকায় গোজামিল দিতে। তাই বিভিন্ন অছিলায় তথ্যে জল মেশানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ। যদিও বিজেপি যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।

তবে বিষয়টি নিয়ে বেজায় বিড়ম্বনায় পড়েছে অসমের এনআরসি কর্তৃপক্ষ। চাপে পড়ে তাদের দাবি, ক্লাউড স্টোরেজের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পর নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে তা আর পুনর্নবিকরণ করা হয়নি। তাতেই এই সমস্যা। প্রাক্তন কোঅর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলা বদলি হয়ে যাওয়ার পরই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে বলেও দাবি তাদের।

অসমে এনআরসি প্রক্রিয়ায় সরকারি কর্তৃপক্ষকে প্রযুক্তিগত দিক থেকে সহায়তা করছিল বেসরকারি বহুজাতিক উইপ্রো। উইপ্রোর তরফে সরকারি আধিকারিকদের তোলা এনআরসি তথ্য রাখা হত ক্লাউড স্টোরেজে। যা নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভাড়া পাওয়া যায়। মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে ফের রিচার্জ করিয়ে নিতে হয়। কিন্তু আচমকা হাজেলার বদলিতে গোলমাল হয়ে যায় গোটা দফতরের কাজ। কর্তৃপক্ষের দাবি, সেই গোলমালের মধ্যে ক্লাউড স্টোরেজ রিচার্জ করার কথা মাথায় ছিল না কারও। যারই ফল তথ্য উধাও।

নতুন কোঅর্ডিনেটর কাজে যোগ দিয়ে এ বিষয়েই কাজ করা শুরু করে দিয়েছেন বলে এনআরসি কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর। তবে এখনও পর্যন্ত এনআরসি তথ্যের কোনও হদিশ নেই।

Comments are closed.