মধ্য প্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়ে হারের মুখে বিজেপি। ২০১৯ লোকসভার আগে বড় ধাক্কা মোদী-অমিত শাহর

২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে বড়সড় ধাক্কা খেলেন মোদী-অমিত শাহ। পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিপর্যস্ত বিজেপি। হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্য রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে বিজেপিকে হারিয়ে সরকার গড়ার পথে কংগ্রেস। তেলেঙ্গানায় একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করল টিআরএস। অন্যদিকে, মিজোরামে সরকার গঠন করছে এমএনএফ।
অযোধ্যায় রাম মন্দির গড়ার জন্য আরএসএস এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দাবি এবং সমাবেশের আবহেই এই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যে কারণে, বিশেষ নজর ছিল রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে। এই তিন রাজ্যে ২০১৪ লোকসভায় ৬৫ টির মধ্যে ৬২ টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। সেখানে তিন রাজ্যেই সরকার চলে যাওয়ায় লোকসভার আগে চাপে পড়ে গেলেন মোদী-অমিত শাহ।
পাশাপাশি, গত ৩-৪ বছর ধরেই গোটা দেশে কংগ্রেসের প্রধান মুখ হিসেবে উঠে আসা রাহুল গান্ধী একের পর এক রাজ্যে নির্বাচনে হারছিলেন। কিন্তু আগামী লোকসভার আগে গত এক বছরে যতগুলি বড় রাজ্যে ভোট হয়েছে, কংগ্রেসের রেজাল্ট যথেষ্টই আশাবাদী হওয়ার মতো, যা আগামী দিনে দেশের কংগ্রেস কর্মীদের অক্সিজেন যোগাবে। গত বছরের শেষে টানটান লড়াইয়ের পর গুজরাতে সামান্য ব্যবধানে বিজেপির কাছে হেরেছিল কংগ্রেস। এবছর কর্ণাটকে বিজেপিকে হারিয়ে সরকার গঠন করেছে জেডিএস-কংগ্রেস। এবার একদম মোক্ষম সময়ে বিজেপির থেকে তিন রাজ্য ছিনিয়ে নিয়ে আগামী লোকসভায় আত্মবিশ্বাসী হয়েই নামবেন কংগ্রেস সভাপতি।
এদিন ভোটের ফলাফলের পর বিরোধীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বিজেপি সরকার যাওয়ার ঘন্টা বেজে গিয়েছে। কংগ্রেস জানিয়েছে, দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন, যা থেকে স্পষ্ট আগামী লোকসভায় পর্যুদস্ত হতে চলেছেন মোদী-অমিত শাহ।
বিরোধীদের মিটিং উপলক্ষ্য এদিন দিল্লিতেই ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের ফলের পর তৃণমূল নেত্রী বলেন, বিজেপির শেষের শুরু হয়ে গেছে। দেশে চূড়ান্ত ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। মানুষ তার থেকে মুক্তি চাইছেন। মানুষ অপেক্ষা করছেন সাধারণ নির্বাচনের জন্য, ভোট হলেই এই সরকার বিদায় নেবে।
এই খবর লেখার সময় পর্যন্ত রাজস্থানে ১৯৯ আসনের মধ্যে ১০১ টি আসনে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস, বিজেপি এগিয়ে ৭৩ টি আসন। মধ্য প্রদেশে ২৩০ টি আসনের মধ্যে ১১৪ টিতে এগিয়ে কংগ্রেস, বিজেপি এগিয়ে ১০৮ টি আসনে। ছত্তিশগড়ে মোট ৯০টি আসনের মধ্যে ৬৫ টি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস, বিজেপি এগিয়ে ১৬ টি আসনে।
মিজোরামে মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ) ৪০টি আসনের মধ্যে ২৬টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।
অন্যদিকে, তেলেঙ্গানায় নিজের কর্তৃত্ব বজায় রেখেছেন কে সি আর। নিজের রাজ্যে কংগ্রেস বা বিজেপি সবাইকেই ধরাশায়ী করেছেন চন্দ্রশেখর রাওয়ের টিআরএস। ১১৯ টি আসনের মধ্যে টিআরএস এগিয়ে ৮৭ আসনে।
রেজাল্টের পর শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত মন্তব্য করেছেন, বিজেপির এবার নিজেদের কাজ ও পদক্ষেপের পর্যালোচনা জরুরি। কংগ্রেসের জয়ে উচ্ছ্বসিত কংগ্রেস মন্ত্রী নভজ্যোৎ সিংহ সিধু বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘বুরা দিন জানেওয়ালা হ্যায়, আউর রাহুল গান্ধী আনেওয়ালে হ্যায়।’

Comments are closed.