নিউজ চ্যানেলে বাবরি ধ্বংসের ফুটেজ দেখানোয় নিষেধাজ্ঞা, সংবাদ পরিবেশনে সতর্কতার নির্দেশিকা

১৯৯২ সালের ৬ ই ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর সরযূ দিয়ে বয়ে গিয়েছে বহু জল। এলাহাবাদ হাইকোর্ট হয়ে মামলা গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে। দীর্ঘদিন সেখানে মামলা চলার পর সদ্য শেষ হয়েছে শুনানি। এবার রায়ের পালা।

১৭ ই নভেম্বর অবসর গ্রহণ করতে চলেছেন সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। তাঁর অবসর গ্রহণের আগেই বাবরি মামলার রায় আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে রায় তাদের পক্ষেই আসবে, এমনটা আগাম ধরে নিয়ে পেশি আস্ফালন শুরু হয়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবিরে। এই পরিস্থিতিতে উত্তেজনা প্রশমনে নিউজ চ্যানেলগুলোকে বাবরি ধ্বংসের ফুটেজ দেখাতে বারণ করে দিল নিয়ামক সংস্থা নিউজ ব্রডকাস্টিং স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি (এনবিএসএ)।

বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ফুটেজ যেন কোনও টিভি চ্যানেল থেকে সম্প্রচারিত না হয়, অযোধ্যা মামলার প্রেক্ষিতে এমনই নির্দেশ দিল নিউজ ব্রডকাস্টিং স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি (এনবিএসএ)।
বুধবার শেষ হয়েছে অযোধ্যা-বাবরি জমি বিতর্ক মামলার শুনানি। কিন্তু রায়দানের আগেই উল্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে বিজেপি শিবিরের বিভিন্ন অংশে। রায় তাদের পক্ষেই আসবে বলে ধরে নিয়েছেন গেরুয়া শিবিরের একাংশ। অন্যদিকে গোলমালের আঁচ করে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যা এবং সংলগ্ন এলাকায় জারি হয়ে গিয়েছে ১৪৪ ধারা। বাতিল হয়েছে সমস্ত সরকারি কর্মীদের ছুটি। সব মিলিয়ে টানটান উত্তেজনার পরিবেশ। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা মাথাচাড়া দিতে পারে, এই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে এবার দেশের সমস্ত নিউজ চ্যানেলকে বাবরি ধ্বংসের ফুটেজ সম্প্রচার করতে বারণ করে দিল এনবিএসএ। টিভি চ্যানেলগুলিকে বলা হয়েছে, অযোধ্যা মামলার খবর পরিবেশনের সময় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ফুটেজ যেন প্রদর্শিত না হয়। পাশাপাশি, অযোধ্যার মতো সংবেদনশীল মামলার খবর পরিবেশনের সময় আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বনেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার অযোধ্যা মামলার দৈনিক শুনানির ৪০ তম দিনে সুপ্রিম কোর্টের ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ মামলার রায়দান স্থগিত রেখেছে। ওইদিনই টিভি চ্যানেলকে অযোধ্যা মামলা সংক্রান্ত খবর পরিবেশনের ব্যাপারে সতর্ক করেছে টেলিভিশন চ্যানেল নিয়ামক সংস্থা। দু’পাতার সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, টিভি চ্যানেলগুলির কোনও প্রোগ্রাম বা তথ্য সম্প্রচারে যেন অযোধ্যা রায় বা প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত খবর অযাচিতভাবে ছড়ানো না হয়। অযোধ্যা মামলা সংক্রান্ত কোনও উদযাপন অনুষ্ঠান বা প্রতিবাদের দৃশ্য সম্প্রচার একেবারেই বারণ করা হয়েছে। শুধু বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দৃশ্যই নয়, অযোধ্যা মামলা সংক্রান্ত খবর পরিবেশনের সময় কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায় ও জাতির প্রতি একপেশে হওয়া অথবা বিরোধিতা করা যাবে না। টিভি চ্যানেলগুলিতে অযোধ্যা মামলা সংক্রান্ত বিতর্কসভায় কোনও চরমপন্থী অভিমত যেন পরিবেশিত না হয়, তার দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। এনবিএসএ-র নির্দেশ, বিতর্কসভায় কোনও জ্বালাময়ী বার্তা যা সমাজের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে এমন বিতর্কের মুহূর্ত টিভিতে সম্প্রচার করা যাবে না।

Comments are closed.