National Anthem Controversy: রবীন্দ্রনাথের জন গণ মন বদলের দাবি বিজেপির সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর, তীব্র প্রতিবাদ

বাঙালির গৌরব ও জাতীয় চেতনার মূলে কঠোরতম আঘাত হানা হচ্ছে! এভাবেই বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর জাতীয় সঙ্গীত বদলের দাবির তীব্র সমালোচনা করল তৃণমূল।

প্রধানমন্ত্রী নিয়ম করে রবীন্দ্রনাথ থেকে আবৃত্তি করছেন। এ মাসে  রাজ্যে এসে শান্তিনিকেতনে যাওয়ার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। বাঙালির মন জিততে রবীন্দ্রনাথকে পাথেয় করেছে গেরুয়া শিবির। তবে বিড়ম্বনা আছে। কদিন আগেই রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থান বিতর্কে অস্বস্তিতে পড়েছিল বিজেপি। এবার রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে মন্তব্য করে বঙ্গ বিজেপির অস্বস্তি আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিলেন বিতর্কিত বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। বাংলা সফরে এলেই যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মুখে অহরহ উঠে আসে, তাঁরই লেখা দেশের জাতীয় সঙ্গীত বদলে দিতে রীতিমতো সোচ্চার হয়েছেন বিজেপি সাংসদ। যা নিয়ে বিজেপিকে বিঁধতে ছাড়েনি তৃণমূল। বাঙালির জাতীয় চেতনায় আঘাত হানা হচ্ছে বলে প্রতিক্রিয়া তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের।

ঠিক কী ঘটেছে?

রবীন্দ্রনাথের লেখা জাতীয় সঙ্গীত ‘জন গণ মন’ বদলের দাবিতে গত ১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর মতে, সিন্ধু প্রদেশ যেহেতু এখন আর ভারতের অংশ নয়, তাই জাতীয় সঙ্গীতে ব্যবহৃত ‘সিন্ধু’ শব্দটি রাখা চলবে না। এছাড়াও জাতীয় সঙ্গীতের একাধিক শব্দ নিয়ে আপত্তি আছে বিজেপি সাংসদের। তাঁর দাবি, রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘জন গণ মন’র পরিবর্তে ১৯৪৩ সালে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ ফৌজের গাওয়া ‘শুভ সুখ চ্যান’ গানটি জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে বেশি গ্রহণযোগ্য। এই গানে দেশাত্মবোধ আরও ভালোভাবে ফুটে উঠেছে বলে দাবি তাঁর। 

গত ১০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দফতর স্বামীর লেখা চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই সংবাদ দিয়ে বিজেপি সাংসদের আশা, ২০২১ এর ২৩ জানুয়ারির আগে জাতীয় সঙ্গীত বদলে ফেলা হবে।

স্বামীর ট্যুইট ঘিরে ইতিমধ্যেই শোরগোল উঠেছে বিভিন্ন মহলে। একযোগে বিজেপি সাংসদের দাবির তীব্র বিরোধিতা করেছে তৃণমূল, সিপিএম ও তৃণমূল। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের তোপ, এখন বিজেপির নয়া দাবি, রবীন্দ্রনাথের লেখা জাতীয় সঙ্গীতও বাতিল করতে হবে! কারণ সেখানে সিন্ধু নদের কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু ১৯১১ সালে কবিগুরু এই গান যখন লিখেছেন তখন দেশভাগ হয়নি। তাছাড়া ইতিহাসও বলে ভারতীয় সমাজব্যবস্থায় সিন্ধু সভ্যতার অবদান কতটা। আসলে এইভাবে বাংলা ও বাঙালির ওপর বিজেপি হামলা শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেন তৃণমূল সাংসদ। তাঁর দাবি, জাতীয় সঙ্গীতের ওপর আক্রমণ মানে বাঙালির গৌরব ও জাতীয় চেতনার মূলে কঠোরতম আঘাত।

এই প্রথম নয়। বিজেপির সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এর আগে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের নাম বদলের দাবি জানিয়েছিলেন। কলকাতা বন্দরের নতুন নামকরণ নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। এবার সরাসরি জাতীয় সঙ্গীত বদলের দাবি।

Comments are closed.