ইন্দিরা মৃত্যুর পর শিখ নিধনের ঘটনায় প্রথম মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করল দিল্লি আদালত

ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর ১৯৮৪ সালে ২ শিখ ব্যক্তিকে হত্যার অপরাধে এক অভিযুক্তকে মৃত্যদণ্ড ও অন্য এক একজনকে যাবজ্জীবনের সাজা ঘোষণা করল দিল্লি আদালত। দিল্লির মহিপালপুরে দুই শিখ ব্যক্তিকে হত্যার অপরাধে ৬৮ বছর বয়সী নরেশ শেরওয়াত ও ৫৫ বছরের যশপাল সিংহের সাজা ঘোষণা হয় মঙ্গলবার।
১ লা নভেম্বর, ১৯৮৪। দিল্লির মহিপালপুরে তাঁদের মুদি দোকানে ছিলেন হরদেব সিংহ ও আরও দু’জন। প্রায় ৮০০ থেকে ১ হাজার উন্মত্ত বিক্ষোভকারী হকি স্টিক, লোহার রড নিয়ে আক্রমণ করে তাঁদের। নিজেদের বাঁচাতে বন্ধু সুরজিৎ সিংহের বাড়িতে আশ্রয় নেন হরদেব সিংহরা। বিক্ষোভকারীরা পিছু নেয় তাঁদের। ঘরে ঢুকে মারধর করা হয়। বাড়ির বারান্দা থেকে নীচে ফেলে দেওয়া হয়। পরে সফদারজং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই মৃত্যু হয় অবতার সিংহ ও হরদেব সিংহের। কিন্তু পরবর্তীকালে দিল্লি পুলিশ প্রমাণের অভাবে কেস বন্ধ করে দেয়।
২০১৫ সালে সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ দলকে নিয়োগ করে ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর দাঙ্গায় শিখদের নিহত হওয়ার ঘটনার তদন্তের জন্য। এরপর ২৯৩ টি পুরনো কেসের মধ্যে ৬০ টি মামলা আবার চালু করা হয়। যার মধ্যে এই প্রথম শিখ হত্যায় সাজা ঘোষণা করল আদালত।
ইন্দিরা গান্ধী হত্যার পরে ভারতজুড়ে শিখ ধর্মের মানুষের ওপর অত্যাচার শুরু হয়। সরকারি হিসেবে, প্রায় ৩ হাজার শিখ ধর্মাবলম্বীকে হত্যা করা হয়। শিখদের প্রতি সবচেয়ে বেশি আক্রমণ হয় রাজধানী দিল্লিতে। প্রচুর মানুষকে বাড়ি থেকে বের করে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
দিল্লি আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে ট্যুইট করেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র নাথ সিং। ট্যুইটারে তিনি লেখেন, অবশেষে সুবিচার হল। ১৯৮৪ সালের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের অন্যান্য অপরাধীরাও শীঘ্র সাজা পাবে বলে আশা রাখেন তিনি।

Comments are closed.