দেশজোড়া প্রতিবাদের মাঝেই কার্যকর হল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, শুক্রবার নির্দেশিকা জারি কেন্দ্রের

গত সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ নিয়ে দেশের জনগণকে ভুল বোঝাচ্ছে কংগ্রেস সহ বিরোধীরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, যতই বিরোধিতা হোক, সিএএ নিয়ে এক ইঞ্চিও পিছু হঠবে না কেন্দ্র। এবার নিজেদের এই অবস্থানে সরকারি শিলমোহর দিয়ে দিল কেন্দ্র।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এদিন থেকেই দেশজুড়ে বলবৎ হয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে গেজেট অফ ইন্ডিয়াতে। উল্লেখ্য, ডিসেম্বর মাসের ১১ তারিখ রাজ্যসভায় পাশ হয়েছিল সংশোধিত সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল বা সিএবি। তার পরদিন, ১২ ডিসেম্বর রাতে তাতে সই করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তারপরেই আইনে পরিণত হয় এই বিল। আর তার ঠিক এক মাসের মাথাতেই এই সংক্রান্ত নোটিফিকেশন প্রকাশ করে কেন্দ্র জানিয়ে দিল দেশজুড়ে লাগু হয়ে গেল বিতর্কিত এই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। যেখানে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, ও জৈন ধর্মের যে সকল মানুষ সে দেশে অত্যাচারের শিকার হয়ে ভারতে এসেছেন, তাঁদের সবাইকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু এই তালিকায় রাখা হয়নি মুসলিমদের। এভাবে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগাভাগি করে নাগরিকত্ব দেওয়া ভারতের সংবিধানের পরিপন্থী বলেই দাবি বিরোধীদের।
উল্লেখ্য এই আইনের বিরোধিতায় ইতিমধ্যে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র আন্দোলন। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি পথে নেমেছে ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, নাগরিক সমাজ এবং বিশিষ্টজনেরা। এই আইনের বিরোধিতায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২৫ জন মানুষ। যার মধ্যে ২১ জন উত্তরপ্রদেশের, ২ জন অসমের ও ২ জন রয়েছেন কর্নাটকের। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, মহারাষ্ট্র, কংগ্রেসশাসিত একাধিক রাজ্য জানিয়ে দিয়েছে তারা কিছুতেই সিএএ মানবে না এবং এই রাজ্যগুলিতে এই আইন লাগু হতে দেওয়া হবে না। এই অবস্থায় কেন্দ্রের এই অবস্থানের ফলে আগামী দিনে এই আন্দোলন এবং তার জেরে দেশে তৈরি হওয়া উত্তপ্ত পরিবেশে কোন দিকে যায় তা দেখার।
ইতিমধ্যেই এই আইনের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টে একাধিক আবেদন জমা পড়েছে। দাবি উঠেছে, অসাংবিধানিক এই আইন বাতিল করুক শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট যার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে নোটিশ পাঠিয়েছে। তবে এখনই এই আইনকে খারিজ করা হচ্ছে না বলেও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ২২ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানি হতে পারে।

 

Comments are closed.