আর্দ্র ও ঠান্ডা আবহাওয়ায় করোনাভাইরাস ড্রপলেটের বিস্তার ও সক্রিয়তা বেশি, সমীক্ষা তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের

হাঁচি, কাশি থেকে নির্গত রেস্পিরেটরি ড্রপলেট গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ার চেয়ে আর্দ্র ও ঠান্ডা আবহাওয়ায় বেশি সক্রিয় এবং বেশি দূর পর্যন্ত ছড়ায়, গবেষকদের নতুন দাবি ঘিরে তোলপাড়।

ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া সান দিয়েগো (UCSD), বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সেস (IISC) এবং টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের এক যৌথ গবেষণাপত্র সম্প্রতি ফিজিক্স অফ ফ্লুয়েডস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তাতে গবেষকরা একটি নতুন গাণিতিক মডেলের সাহায্যে দেখিয়েছেন কোভিড-১৯ সহ অন্যান্য রেস্পিরেটরি ভাইরাসের প্রাথমিক বিস্তার কতটা হতে পারে। সেই বিস্তারে ড্রপলেটের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। পরীক্ষায় দেখা হয়েছে, কত দ্রুত এবং কত দূরত্ব পর্যন্ত ড্রপলেট ছড়িয়ে পড়তে পারে। সর্বোচ্চ কতক্ষণ তা টিকে থাকতে পারে তাও দেখা হয়েছে।

 

কতটা দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে ড্রপলেট? 

গবেষকরা জানাচ্ছেন, আবহাওয়ার উপর ভিত্তি করে কিছু ড্রপলেট বাষ্পীভবনের আগে তাদের উৎস থেকে সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১৩ ফুট পর্যন্ত যেতে পারে। ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ৪০ শতাংশ আর্দ্রতায় একটি ড্রপলেট পাড়ি দিতে পারে ৮ ফুট পর্যন্ত। আবার ৪১ ডিগ্রি ফারেনহাইট এবং ৮০ শতাংশ আর্দ্রতায় একটি ড্রপলেট সর্বোচ্চ ১২ ফুট পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা রাখে। এবং তা হাওয়ার গতিবেগের উপর নির্ভরশীল নয়। অর্থাৎ, গবেষকদের দাবি, মাস্ক ছাড়া ৬ ফুট সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়েও সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বিদ্যমান।

 

তাহলে শীতে কি করোনা নিয়ে বেশি ভয়? 

গবেষকরা জানাচ্ছেন, ড্রপলেটের সক্রিয়তার মেয়াদ তাপমাত্রার চেয়েও আর্দ্রতার উপর বেশি নির্ভরশীল। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বাড়লে ড্রপলেট দীর্ঘ সময় ধরে টিকে থাকতে পারে এবং দীর্ঘ দূরত্ব পাড়ি দিতে পারে।

সেই সঙ্গে কোন ড্রপলেট কতটা ভয়ঙ্কর হবে তা নির্ভর করছে তার সাইজের উপরও। গবেষকরা জানাচ্ছেন, ১৪ থেকে ১৮ মাইক্রনের ড্রপলেট বাষ্পীভূত হওয়ার আগে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে, ছড়াতে পারে অনেক বেশি দূরত্বে। আবার একদম ছোট ড্রপলেট হাঁচি ও কাশি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাষ্পে পরিণত হয়। এছাড়া ১০০ মাইক্রনের বেশি আকারের ড্রপলেট ছড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা মাটিতে পড়ে যায়।

তবে যে কোনও ধরনের ড্রপলেটের ছোঁয়া এড়াতে মুখে মাস্ক ব্যবহারেই বেশি জোর দিচ্ছেন তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।

Comments are closed.