আসন সমঝোতা ভেঙেই দিল কংগ্রেস! কংগ্রেসের জেতা ৪ আসন ছেড়ে আজই বাকি কেন্দ্রে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে চায় সিপিএম
সিপিএমের নিচুতলা থেকে অনবরত চাপ ছিল তাড়াতাড়ি প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার ব্যাপারে, তা না হলে প্রচারে নামতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রাজ্যের বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার রাস্তা থেকে সরতে চায়নি আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করেছে রাজ্যে বিরোধী ভোট যাতে ভাগ না হয়ে এক বাক্সে পড়ে তা নিশ্চিত করতে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিপিএমের সঙ্গে আসন সমঝোতা ভেঙেই দিল কংগ্রেস। সোমবার রাতে গোটা দেশের কিছু আসনের সঙ্গে এরাজ্যেরও ১১ টি কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করল কংগ্রেস হাইকমান্ড, যার মধ্যে রয়েছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রায়গঞ্জ আসন। রায়গঞ্জে দীপা দাশমুন্সি কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন। ২০১৪ সালে রাজ্যে কংগ্রেস এবং সিপিএমের জেতা ৬ টি আসনে একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রার্থী না দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল সিপিএম। সেই অনুযায়ী কংগ্রেসের জেতা ৪ টি এবং আরও ১৩ টি আসন বাদ দিয়ে ২৫ টি কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিল বামফ্রন্ট। কিন্তু রাজ্যে মোট ১৭ টি আসন দাবি করে নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকে কংগ্রেস। যার জেরে যথেষ্টই ক্ষুব্ধ ছিল সিপিএম নেতৃত্ব।
রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা না হলে সিপিএমের যত না ক্ষতি, বিজেপির লাভ তার থেকে অনেক বেশি। এই সত্য না বুঝে প্রদেশ কংগ্রেস যেভাবে রাজ্যের সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে বিজেপির বিরুদ্ধে তাদের লড়াইয়ের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এই অবস্থায় আজ, মঙ্গলবারই রাজ্যের একাধিক আসনে বামফ্রন্ট প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারে বলে সূত্রের খবর। জানা যাচ্ছে, অন্তত বাঁকুড়া, আসানসোল, তমলুক, বোলপুর, মথুরাপুর, বারাকপুরের মতো কিছু আসনে মঙ্গলবারই সম্ভবত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারেন বিমান বসু। বাঁকুড়ায় সিপিএমের সম্ভাব্য প্রার্থী অমিয় পাত্র, আসানসোলে সম্ভাব্য প্রার্থী গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়, বোলপুরের সম্ভাব্য প্রার্থী রামচন্দ্র ডোম, বারাকপুরের সম্ভাব্য প্রার্থী গার্গী চট্টোপাধ্যায়। কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের সম্ভাব্য সিপিএম প্রার্থী শান্তনু ঝা। কংগ্রেসের এই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা সত্ত্বেও সিপিএম নেতৃত্বের একাংশ এখনও চাইছেন গতবার কংগ্রেসের জেতা ৪ টি আসনে (মালদহ উত্তর ও দক্ষিণ, জঙ্গিপুর এবং বহরমপুর) এখনই প্রার্থী দেওয়ার দরকার নেই। এই আসনগুলি ছেড়ে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব এবং রাজ্যের মানুষকে একটা বার্তা দিতে চাইছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। এরপরও যদি কংগ্রেস সব আসনে প্রার্থী দেয় তখন এই ৪ আসনেও প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাববে সিপিএম।