পেগাসাস ইস্যুতে চাপে মোদী সরকার; একাধিক অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের সিপিএম সাংসদের

পেগাসাস ইস্যুতে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে ফের সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হল। কোর্টের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে পেগাসাস কাণ্ডের তদন্ত হোক, সুপ্রিম কোর্টে আর্জি সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ জন বৃতাসের।

কেরালা থেকে রাজ্যসভার সদস্য জন বৃতাস রাজনীতিকের পাশাপাশি একজন সিনিয়র সাংবাদিক। হলফনামায় তিনি দাবি করেছেন, যে ভাবে সরকারের সমালোচক থেকে শুরু করে বিরোধীদের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে, তাতে দেশের সাধারণ মানুষের নূন্যতম যে নাগরিক অধিকার তা বিঘ্নিত হয়েছে।

এর আগে মনোহর লাল নামে এক জনৈক আইনজীবী ফোনে আড়িপাতা ঘটনায় আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা দায়ের করেন। জানা যাচ্ছে, চলতি সপ্তাহে দুটি মামলারই শুনানি হতে পারে।

জন তাঁর দায়ের করা মামলায় পেগাসাস ইস্যু নিয়ে একাধিক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, পেগাসাস ইস্যু নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান স্পষ্ট নয়। এই ঘটনায় সরকার একবারও তাদের দোষ স্বীকার করেনি, আবার নিজেরা জড়িত নয় একথাও স্পষ্ট করে বলছে না। কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী রাজ্যসভায় যে বিবৃতি দিয়েছেন, তাতে এটা পরিষ্কার নয় যে এই ঘটনায় সরকার জড়িত নয়।

সিপিএম সাংসদ তাঁর হলফনামায় যে বিষয়গুলি তুলে ধরেছেন তার মধ্যে অন্যতম

– কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী ২০১৯ সালে ২৮ নভেম্বর রাজ্যসভায় বলছিলেন কোনওরকম বেআইনি নজরদারি চালানো হয়নি। এর মানে এটা দাঁড়ায় যে আইনি হলেও নজরদারি চালানো হয়েছিল। সরকারকে এই বিষয়ে জনসমক্ষে বিস্তারিত জানতে হবে।

-পেগাসাস স্পাইওয়্যারকে অনৈতিক ভাবে ব্যবহার করে হয়ে থাকলে তা দেশের মানুষের বাকস্বাধীনতা এবং গোপনীয়তার অধিকারকে নষ্ট করছে।

-সুপ্রিম কোর্টের বিচারক, অন্যান্য আধিকারিকের ফোন ট্যাপ করার অর্থ দেশের বিচারব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ।

-প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনারের ফোনও ট্যাপ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এর জেরে দেশের গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

ওই হলফনামায় সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ আরও দাবি করেন, সিবিআই অফিসারদের ফোনেও আড়িপাতা হয়েছে বলে খবর। তদন্তকারী সংস্থাগুলির স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকার বিঘ্নিত হচ্ছে এই জাতীয় ঘটনার জেরে।

ফোনে আড়িপাতা তালিকায় বিজ্ঞানীও রয়েছেন, যারা এই অতিমারীরাতে করোনার টিকা সহ একাধিক বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন।

জনের অভিযোগ, বিরোধী দল থেকে শুরু করে দেশের প্রায় সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ফোনে আড়িপাতা থেকে পরিষ্কার যে দেশের সাধারণ মানুষের নাগরিক অধিকারকে এই সরকার কোনওরকম সম্মান দেয় না ।

উল্লেখ্য পেগাসাস নিয়ে কার্যত উত্তাল সংসদ। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেত্রীও দাবি তুলেছিলেন শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপে এই ঘটনার তদন্ত হোক। আর এসবের মধ্যেই বাম নেতার দায়ের করা মামলা মোদী সরকারের উপর পেগাসাস নিয়ে বাড়তি চাপ বাড়ালো বলে মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের।

Comments are closed.