শুভেন্দু অধিকারী নয় ৪২০ অধিকারী! নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে বিজেপি প্রার্থীকে তুলোধোনা অভিষেকের

সভামঞ্চ থেকে অভিষেকের ঘোষণা, নন্দীগ্রামের প্রতিটি বুথে অধিকারীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে

২০২১ এর বিধানসভা ভোটের সবথেকে হাইভোল্টেজ কেন্দ্রের নাম নন্দীগ্রাম। বুধবার জমি আন্দোলনের আঁতুর ঘরে দাঁড়িয়ে প্রাক্তন সতীর্থ তথা বর্তমান বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানালেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক ব্যানার্জি। হাজার প্ররোচনাতেও শুভেন্দু যখন অভিষেকের নাম মুখে নিচ্ছেন না তখন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ আক্রমণ শানালেন শুভেন্দুর নাম করে।
অভিষেকের তোপ, সংখ্যার ভিত্তিতে মানুষের নাম হলে, ওর নাম শুভেন্দু অধিকারী নয় ৪২০ অধিকারী হত। কিন্তু কেন এমন বললেন অভিষেক ব্যানার্জি?

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে,মমতা ব্যানার্জি নন্দীগ্রামে নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা করার দিনই, তৃণমূলের প্রাক্তন হেভিওয়েট শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, উঁনি তো ৬২ হাজারের ভরসায় দাঁড়িয়েছেন। আমরা লড়ব ২ লক্ষ ১৩ হাজারকে নিয়ে। বিজেপিতে যোগ দিয়েই তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে সরাসরি মেরুকরণের তাস খেলেছিলেন শুভেন্দু। বুধবার নন্দীগ্রাম থেকে তারই জবাব দিলেন মমতা ব্যানার্জির ভাইপো।
তৃণমূলের অভিযোগ, নন্দীগ্রাম বা তার আশেপাশে প্রতিটি সভা থেকে শুভেন্দু প্রবল সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করছেন। কখনও তাঁর মুখে উঠে আসছে হিন্দু-মুসলিম। আবার কখনও নন্দীগ্রামে জিততে টানছেন পাকিস্তানকে।
মেরুকরণের অস্ত্রকে আরও তীব্র করে শুভেন্দুর বলেছিলেন, এখানে তৃণমূল জিতলে পাকিস্তানে বোমা ফাটিয়ে উদযাপন করা হবে। পাকিস্তান প্রসঙ্গ নিয়েও শুভেন্দু সহ বিজেপিকে একহাত নেন অভিষেক।
একটি চিঠি দেখিয়ে অভিষেক দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী বন্ধুত্বের বার্তা দিয়ে পাকিস্তানকে চিঠি লিখছেন! আর সেই দলের এক গদ্দার পাকিস্তানকে টেনে নিজে ভেসে থাকতে চাইছেন।
শুভেন্দুকে খোঁচা দিয়ে অভিষেক ব্যানার্জি আরও বলেন, দীর্ঘ দশ বছর যখন মমতার উন্নয়নের খতিয়ান নিয়ে নন্দীগ্রামের মানুষের দোরে দোরে ভোট চাইতে গেছ তখন হিন্দু মুসলিম মনে পড়েনি? সভামঞ্চ থেকে অভিষেকের ঘোষণা, নন্দীগ্রামের প্রতিটি বুথে অধিকারীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

[আরও পড়ুন- যোগী BJP-র তারকা প্রচারক আর বাংলায় ভোট করাবে UP পুলিশ! আপত্তি জানিয়ে কমিশনে TMC]

রাজনৈতিক কারবারিদের একাংশের মতে, শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূলের বিচ্ছেদের একটি কারণ অভিষেক ব্যানার্জি। শুভেন্দুও ১৯ ডিসেম্বর বিজেপিতে যোগ দিয়েই সুর চড়িয়েছিলেন, তোলাবাজ ভাইপো হঠাও, দেশ বাঁচাও। জবাব আসতে দেরি হয়নি। শুভেন্দুকে প্রতিটি সভা থেকে মীরজাফর, বিশ্বাসঘাতক বলে তোপ দেগে চলেছেন যুব তৃণমূল সভাপতি। এদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
এদিন কাঁথিতে প্রধানমন্ত্রীর সভা ছিল। বহিরাগত তত্ত্বের প্রসঙ্গ টেনে মোদীর বাংলা উচ্চারণকে তীব্র কটাক্ষ করেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। এদিন ঘুরে ফিরে বারবার বিজেপি প্রার্থী তথা নন্দীগ্রাম আন্দোলনে মমতার ডান হাত শুভেন্দুকে বাছা বাছা বাক্যবাণে বেধেঁন অভিষেক। ভিড়ে ঠাসা জনসভা থেকে যুব তৃণমূল সভাপতির মন্তব্য, বলেছিলে না লড়াইয়ের ময়দানে দেখা হবে? আজ বলে যাচ্ছি ১ তারিখ দেখা হবে, ২ তারিখ বিশ্বাসঘাতকদের বিসর্জন হবে।

Comments are closed.