খড়কুটোর মতো উড়ছে বাড়ি, দোকান, সমুদ্রে তাল গাছ সমান ঢেউ! কেমন ছিল যশের ল্যান্ডফল?

সওয়া ৯ টা নাগাদ ল্যান্ডফলের সময় ঘূর্ণিঝড়ের মাথা প্রথমে ঢুকতে শুরু করে

প্রবল ঝড়ে গাছের ডালপালা উড়তে দেখেছেন অনেকে। কিন্তু আস্ত দোকান উড়তে দেখেছেন? একটি নয়, অনেকগুলো দোকান, বাড়ি ঝড়ের বেগে খড়কুটোর মতো উড়ে যাচ্ছে, সমুদ্রে উঠছে তাল গাছ সমান ঢেউ! চুম্বকে এই হল ঘূর্ণিঝড় যশের ল্যান্ডফলের সময় ধামড়ার ছবি।

টানা ৩ ঘন্টার বেশি সময় ধরে চলে ঘূর্ণিঝড় যশের দাপট। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস ছিল, পারাদ্বীপ ও সাগরদ্বীপের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে প্রবেশ করবে। বুধবার নির্ধারিত সময়ের আগেই বালেশ্বরের ধামড়ার উত্তরে এবং বহনাগার দক্ষিণের মধ্যবর্তী অঞ্চলে আছড়ে পড়ে যশ। ঘড়িতে তখন সওয়া ৯ টা।

আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ল্যান্ডফলের সময় ঝড়ের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৩০-১৪০ কিমি। বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫৫ কিমি। সওয়া ৯ টা নাগাদ ল্যান্ডফলের সময় ঘূর্ণিঝড়ের মাথা প্রথমে ঢুকতে শুরু করে। যা তুলনামূলক ভাবে অনেক কম শক্তিশালী। ফলত সেখানকার আবহাওয়ায় সামান্য পরিবর্তন হয়। কিছুক্ষণের জন্য ঝড়ের বেগ ও বৃষ্টির পরিমাণ কমে যায়। আচমকাই শান্ত সমস্ত কিছু।

মিনিটখানেক এমন যেতেই গোঁ গোঁ শব্দে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ। এক ধাক্কায় ঝড়ের দাপট বাড়ে ১০০ গুণ! এমনই জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জীবনে এমন ঝড়ের রূপ দেখেননি ধামড়া এলাকার মানুষ। সঙ্গে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি।

ঝড়ের দাপট ছিল এমন যে তা বড় বড় গাছের পাশাপাশি উড়িয়ে নিয়ে গেছে বাড়ি, দোকান ঘরকেও! এমন দৃশ্যও কখনও দেখেননি ওখানকার মানুষ।

সকালে ঘূর্ণিঝড় যশের ল্যান্ডফল হওয়ার আগে থেকেই ওড়িশার উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়ার তাণ্ডব শুরু হয়। উত্তাল হয় সমুদ্র, নারকেল গাছ সমান ঢেউ উঠতে শুরু করে সমুদ্রে।

সূত্রের খবর, যশের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে ওড়িশার বালেশ্বর ও ভদ্রক জেলায়। ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার আগে উপকূলবর্তী এলাকাগুলি থেকে প্রায় ৫.৮ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।

এখনও পর্যন্ত ২ জনের প্রাণহানির খবর। গোটা ভদ্রক জেলায় লক্ষাধিক বড় গাছ উপড়ে গিয়েছে। ঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসের কারণে ভেসে গিয়েছে ভদ্রক জেলার বহু গ্রাম। ঘর-বাড়ি ও মৎস্যজীবীদের নৌকা ভেঙে গিয়েছে। চাষের জমিতে ঢুকে পড়েছে নোনা জল।

ভুবনেশ্বর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, বুধবার ওড়িশার বেশিরভাগ এলাকাতেই সারাদিন বৃষ্টি চলছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে ভদ্রক জেলায়।

Comments are closed.