মাস্কের কামাল: কেরলে চার ল্যাব কর্মীর করোনা পজিটিভ, সংস্পর্শে আসা ২,১২৩ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে হাত ধোওয়ার পাশাপাশি মুখে মাস্ক পরার কোনও সুফল আছে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে মাস্ক ব্যবহার করলেই যে পুরোপুরি সংক্রমণ ঠেকানো যাবে, এমন ভাবার কারণ নেই। যদিও গত মাসে আমেরিকার সেন্টার্স ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এর একটি রিপোর্টে মুখে মাস্ক ব্যবহারের উপযোগিতা সম্পর্কে একটি তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। মিসৌরির একটি কেস স্টাডিতে তাঁরা দেখেছেন, একটি হেয়ার সালঁর দুই স্টাইলিস্ট করোনা সংক্রমিত হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের সংস্পর্শে আসা ১৪০ জন মানুষ সংক্রমিত হননি। সেই সমীক্ষায় উঠে আসে মাস্কের গুরুত্ব। দাবি করা হয়, সালঁ-র দুই স্টাইলিস্ট মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস ব্যবহার করেছিলেন বলেই তাঁদের কাছে আসা মানুষেরা সংক্রমিত হননি। এবার আরও বড় মাত্রায় সেই প্রমাণ মিলল ভারতে।

কেরলের আলাপ্পুঝা জেলা। সেখানকার এক ল্যাবরেটরির চারজন কর্মীর শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মেলার পর তাঁদের সংস্পর্শে আসা ২,১২৩ জনকে দু’সপ্তাহ হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। বুধবার তাঁদের করোনা পরীক্ষার ফলাফল বাইরে আসতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে কেরলের স্বাস্থ্য দফতর। জানা গিয়েছে, এঁরা কেউ সংক্রমণের শিকার হননি।

গত ১৬ জুলাই ওই ল্যাবের এক কর্মী করোনা সংক্রমিত হন। ওই একইদিনে আরও তিন কর্মীর করোনা পরীক্ষা করা হলে তাঁদের রেজাল্টও পজিটিভ আসে। দুশ্চিন্তায় পড়ে কেরলের স্বাস্থ্য দফতর। কারণ সংক্রমিত ল্যাব কর্মীদের সংস্পর্শে আসা দু’ হাজারের বেশি মানুষের যদি ১০ শতাংশও সংক্রমিত হন তবে গোষ্ঠী সংক্রমণের সমূহ আশঙ্কা। তড়িঘড়ি ২,১২৩ জনকে চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। তবে দু’সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এঁদের কেউই করোনা সংক্রমিত হননি বলে জানিয়েছে কেরলের স্বাস্থ্য দফতর। তারা জানাচ্ছে কেরল সরকারের সেফটি গাইডলাইন মেনে সবাই মুখে মাস্ক ব্যবহার করার ফলেই বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে। কেরলের কোনও ল্যাবেরেটরি অথবা সরকারি ও বেসরকারি অফিসে মাস্ক ছাড়া ঢুকতে দেওয়া হয় না। সংশ্লিষ্ট অফিস বা ল্যাবে কর্মরতদের মুখে মাস্ক এবং হাতে গ্লাভস পরা বাধ্যতামূলক। সেই সঙ্গে বারবার স্যানিটাইজার ব্যবহারের নির্দেশ রয়েছে।

কেরলের এই ঘটনাই প্রমাণ করল করোনা সংক্রমণ রোধে কতটা কার্যকরী মাস্ক ও গ্লাভস, বলছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। জানা যাচ্ছে, ল্যাবের যে কর্মী প্রথম করোনা সংক্রমিত হন, তাঁর প্রতিবেশী ছিলেন এক মাছ ব্যবসায়ী। কেরলের যে সব এলাকায় করোনার প্রভাব তীব্র তার মধ্যে একটি জায়গা এর্নাকুলামের চেল্লানাম হারবার। সেখান থেকে সম্প্রতি সফর করে গিয়েছিলেন ওই মাছ ব্যবসায়ী।

Comments are closed.