সোনভদ্রে গণহত্যার গ্রামে কি বাড়ছে মাও তৎপরতা? নিখোঁজ ২৫ তরুণ, এলাকায় বস্তার-দান্তেওয়াডার নেতারা, গোয়েন্দা বাহিনীতে ‘লাল’ সতর্কতা

আদিবাসী গণহত্যার পর কি উত্তর প্রদেশের সোনভদ্রে মাওবাদীদের আনাগোণা বাড়ছে? সম্প্রতি গোয়েন্দা বাহিনীর মাওবাদী বিশেষজ্ঞদের সশব্দ উপস্থিতি সাধারণ মানুষের কৌতুহল বাড়াচ্ছে। পুলিশের মাথাব্যথার সবচেয়ে বড় কারণ, এলাকায় মাওবাদী-নকশালপন্থী রাজনীতির বহু পুরনো ইতিহাস। তাই খবর পেতেই পত্রপাঠ কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন রাজ্যের দুঁদে গোয়েন্দারা। খুব কাছ থেকে গোটা ঘটনার উপর নজর রাখছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর কর্তারা।
সোনভদ্র, মির্জাপুরে মাওবাদী সমর্থকেরা একাধিক মিটিং করেছেন। গণহত্যার ঘটনার পর থেকেই মুরটিয়া আর উভা গ্রামের জনা ২৫ তরুণের কোনও খোঁজ নেই। কোথায় তাঁরা? বাড়ির উত্তরে খুশি নন গোয়েন্দারা। রহস্য বাড়ছে।
মির্জাপুরে বস্তার-দান্তেওয়াডার মাওবাদী নেতাদের আনাগোণার খবর পাওয়া গিয়েছে।
শেষ ১০-১৫ বছরে তেমন কোনও বড় মাওবাদী হিংসার কথা শোনা না গেলেও, ২০০৪ সালের নভেম্বরে চান্দৌলি জেলায় নারকাটি কালভার্টে মাওবাদী গেরিলা অ্যাম্বুশে ১৭ জন প্রভিন্সিয়াল আর্মড কনস্টাব্যুলারি (পিএসি) জওয়ান প্রাণ হারান। সোনভদ্র, মির্জাপুর, চান্দৌলিতে মাওবাদী রাজনীতির ইতিহাস বহু পুরনো। আদিবাসীদের একটি অংশের উপর এখনও মাওবাদীদের প্রভাব অটুট বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
এদিকে প্রশাসনও বসে নেই। এক সিনিয়র আধিকারিক বলছেন, আমরা গোটা ঘটনার উপর নজর রাখছি। ৩ জেলা আর আশেপাশের এলাকার সমস্ত মাও-নকশাল সমর্থক, সহানুভূতিশীলদের গতিবিধি আমাদের নজরে আছে। তাঁরা কী করছেন, কোথায় যাচ্ছেন, কাদের সঙ্গে যোগাযোগ, সব রেকর্ড হচ্ছে। কিন্তু মাওবাদী মোকাবিলায় এই যথেষ্ট নয়, বলছেন মাওবাদী বিশেষজ্ঞ পুলিশ কর্তা।
স্থানীয় পুলিশ সূত্রের খবর, এলাকার একাধিক মোবাইল ফোন মনিটর করা হচ্ছে। বাইরে থেকে জেলায় ঢোকা লোকজনের উপরও সতর্ক নজর রাখছে পুলিশ। মাওবাদীদের ডিজিটাল প্রোপাগান্ডা মনিটর হচ্ছে সরাসরি দিল্লি থেকে। রাজ্যের আধিকারিকরা প্রতিনিয়ত দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন।
গণহত্যা এবং তারপর থেকে চলা অশান্ত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যাতে মাওবাদীরা এলাকায় ফের জন সমর্থন আদায় করার মতো জায়গায় পৌঁছতে না পারে, তা নিশ্চিত করাই এখন প্রশাসনের কাছে বড় লড়াই।

Comments are closed.