পিএম কেয়ারস ফান্ডে ২১ কোটি টাকা অনুদান, তারপরই ২ হাজার কর্মীকে ছাঁটাই ইন্ডিয়া বুলসের

এ যেন সেই প্রাচীন প্রবাদ। এক হাতে আসবে, অন্য হাতে যাবে। ইন্ডিয়া বুলস হাউজিং ফিনান্সের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা হুবহু এক। অন্তত কর্মীদের একাংশের অভিযোগ তাই। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখতে যে পিএম কেয়ারস ফান্ড তৈরি হয়েছে, তাতে ইন্ডিয়া বুলস অনুদান দিয়েছে ২১ কোটি টাকা। আর তারপরেই সংস্থার ২ হাজার কর্মীকে বিনা নোটিসে ছাঁটাই করেছে তারা।

ইন্ডিয়া বুলসের ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের অভিযোগ, হোয়াটসঅ্যাপ কলে আচমকাই তাঁদের বরখাস্ত করেছে ইন্ডিয়া বুলস হাউজিং ফিনান্স কোম্পানি। সংস্থার এই অবিবেচনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড়।

যে ইন্ডিয়া বুলস করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর পিএম কেয়ারস ফান্ডে কয়েক কোটি টাকা অনুদান করে, তারাই কীভাবে বিনা নোটিসে হাজার হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করে দেয়! তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংস্থার কর্মীদেরই বড় অংশ। বরখাস্ত হওয়া কর্মীদের ক্ষোভ, এই সঙ্কটের সময় কোথায় চাকরি খুঁজবেন তাঁরা? এখন পরিবারের অন্ন সংস্থানই সমস্যার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই ট্যুইটারে জানান, তাঁরা পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। আচমকা ছাঁটাইয়ের জেরে পরিবার নিয়ে প্রায় পথে বসার উপক্রম।

প্রায় ২৬ হাজার কর্মী কাজ করতেন ইন্ডিয়া বুলস হাউজিং ফিনান্সে। জানা গিয়েছে, এঁদের মধ্যে অন্তত ২ হাজার কর্মীকে চাকরি ছাড়তে নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সংস্থার দাবি, প্রত্যেক আর্থিক বর্ষে পারফরমেন্স রিভিউ করে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কর্মীকে ছাঁটাই করার নিয়ম তাদের নতুন নয়। যদিও কর্মীদের অভিযোগ ভিন্ন। বরখাস্ত হওয়া কর্মীরা ট্যুইটারে জানাচ্ছেন, কোনও নোটিস ছাড়া শুধু একটা হোয়াটসঅ্যাপ কলে তাঁদের পদত্যাগ করতে বলা হয়। ৩১ মে-র মধ্যে ইস্তফা দেওয়ার কথা বললেও ওই মাসের বেতন কিংবা কোনও প্যাকেজের কথা বলা হয়নি। এর মধ্যে বহু কর্মীর পারিশ্রমিকও ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সংস্থার নাগপুরের অফিস থেকে বরখাস্ত হওয়া এমনই এক কর্মী সংবাদমাধ্যমকে জানান, অফিসের ম্যানেজার ৩১ মে-র মধ্যে অর্ধেক কর্মীকে পদত্যাগ করতে বলেছেন। বরখাস্ত হওয়া কর্মীদের অভিযোগ, যে সংস্থা পিএম কেয়ারস ফান্ডে ২১ কোটি টাকা অনুদান করে, তারাই বিনা নোটিসে হাজার হাজার কর্মীকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করছে। পিএম কেয়ারস ফান্ডে সংস্থা যে ২১ কোটি টাকা দিয়েছে, তা দিয়েই ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের বেতন দেওয়া যেত, এমন দাবিও করছেন ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের একাংশ। অনেকেই ওই ট্যুইটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, পিএমও অফিস, শ্রম মন্ত্রককে উদ্ধৃত করে পদক্ষেপ গ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন। সকলের প্রশ্ন একটাই, ত্রাণ তহবিলে মোটা টাকা অনুদান দিয়ে যদি সংস্থায় হাজার কর্মীকে বিনা নোটিসে ছাঁটাই করতে হয়, তাহলে ওই অনুদানের উদ্দেশ্য কি?

Comments are closed.