রোজকার মত, বৃহস্পতিবারও প্রিয় দলের খেলা দেখতে যাচ্ছিল মোহনবাগান সমর্থক বছর একুশের প্রতনু পাখিরা। স্কট লেনের বাসিন্দা প্রতনু শিয়ালদা থেকে ট্রেনে কল্যাণী রওনা হয়। কিন্তু তাঁর আর মাঠে যাওয়া হল না। খড়দহ ও টিটাগড় স্টেশনের মাঝে ইলেকট্রিক পোস্টে ধাক্কা খায় প্রতনু। তার কপালে গুরুতর আঘাত লাগে। গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়ে ঘিলু বেরিয়ে আসে। ঘাড়ের হাড় ভেঙে যায়। গুরুতর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় একটি চোখ।
সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে আসা হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে তাঁকে সেখানে ভর্তি করা যায়নি। মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করা প্রতনুকে নিয়ে যাওয়া হয় বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। দেওয়া হয় ভেন্টিলেশনে। সেখানেই লাইফ সাপোর্টে আছে প্রতনু।
এই মোহনবাগান সমর্থকের বাবা সামান্য মাছ বিক্রেতা। তাঁর পক্ষে বেসরকারি হাসপাতালের ব্যয়বহুল চিকিৎসার ভার বহন করা সম্ভব নয়। আর তাই মাঠে যতই প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকুক, এই মোহনবাগান সমর্থককে বাঁচাতে জোট বেঁধেছে ময়দান। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে প্রতনুর বাবার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য। সেখানেই যার যেটুকু সামর্থ্য দিচ্ছেন ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের সর্মথকরা।
হাসপাতালের বিল ইতিমধ্যেই ছুঁয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকা। সূত্রের খবর গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র ১ লক্ষ টাকা জমা করা হয়েছে। এরই মধ্যে এই মোহনবাগান সমর্থকের পাশে দাঁড়িয়েছেন ইস্টবেঙ্গল ম্যানেজার দেবরাজ চৌধুরী। তিনি এক লক্ষ টাকা দিয়েছেন। এগিয়ে এসেছেন সদ্য প্রাক্তন ফুটবলার মেহতাব হোসেনও। দু-একদিনের মধ্যেই ৫০ হাজার টাকা সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, প্রাক্তন ফুটবলার এবং বর্তমান বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস। এছাড়াও বহু ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান সমর্থক অর্থ সাহায্য করছেন প্রতনুর জন্য। ময়দানে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে একটাই কথা, ‘ফাইট প্রতনু ফাইট’।