এনআরসি ও এনপিআর চালু করতে দেবেন না, অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি রোমিলা থাপার, প্রশান্ত ভূষণদের

এনআরসি ও এনপিআর চালু করতে দেবেন না,  অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি দিয়ে আর্জি জানালেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টরা।
ইতিহাসবিদ রোমিলা থাপার, সমাজকর্মী ও লেখক হর্ষ মান্দের, মহাত্মা গান্ধীর পৌত্র তথা লেখক রাজমোহন গান্ধী, আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ, সমাজকর্মী শবনম হাশমি, অরুণা রায়, বাংলাদেশে ভারতের প্রাক্তন হাই কমিশনার দেব মুখার্জি সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের এই চিঠিতে সই রয়েছে।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, ভারতের বহু নাগরিক কেন্দ্রের এনআরসি ও এনপিআর বয়কট করছেন বলে জানিয়েছেন। তাঁরা স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, কাগজ দেখাবেন না। কিন্তু এই মানুষগুলোর রাজ্য সরকারকে পাশে পাওয়ার দরকার। তাঁদের জীবনের এই সঙ্কটপূর্ণ সময়ে রাজ্য সরকার পাশে থাকুক। দেশের সংবিধান রক্ষার্থে রাজ্য সরকারগুলিকে পদক্ষেপ করার আবেদন করেছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনেরা।
অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশে রোমিলা থাপাররা লিখেছেন, যদি তাঁদের সরকার এনপিআর ও এনআরসি রুখে দেয়, তাহলেই কেন্দ্রের এই বিভাজনের এজেন্ডা স্তব্ধ করা সম্ভব হবে। তাঁরা এই চিঠি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী কে পালানিস্বামীকে।
চিঠিতে বিশিষ্টজনেরা লিখেছেন, সব রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালু করে দিতে পারে। কিন্তু এনআরসি কিংবা এনপিআর প্রক্রিয়া শুরু করতে গেলে রাজ্য সরকারের কর্মীদের লাগবে। তাঁরাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন। তাই রাজ্যগুলি যদি ঘোষণা করে দেয়, তারা এনপিআর ও এনআরসি করতে দেবে না, তাহলেই মানুষের আন্দোলন সফল হবে।
প্রসঙ্গত, বাম শাসিত কেরল সরকার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে। কংগ্রেস শাসিত পঞ্জাবও একই পথ অনুসরণ করেছে। দুই রাজ্য তাদের বিধানসভাতেও এ ব্যাপারে প্রস্তাব পাশ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও জানিয়েছেন, আগামী ২৭ জানুয়ারি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তাঁরা বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করবেন।
কেরল সরকারের উদাহরণ দিয়ে চিঠিতে আবেদন করা হয়েছে, অন্যান্য অ-বিজেপি সরকারও যেন সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। ইতিহাসবিদ, সমাজকর্মী, আইনজীবী ও আমলাদের মতে, রাজ্যগুলি যদি এভাবে না এগোয় তবে তাদের একটি মাত্র রাস্তা আছে, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অমান্য করা। কিন্তু সংবিধান রক্ষার্থে আর কোনও রাস্তা নেই বলে অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের জানান বিশিষ্টরা।

Comments are closed.