মহারাষ্ট্র-হরিয়ানা এবং ১৭ রাজ্যের উপ-নির্বাচনে ৩৮ শতাংশ আসনে জয় বিজেপির! এই ফল কি ধাক্কা গেরুয়া শিবিরের কাছে?

মহারাষ্ট্রে সরকার গড়তে চলেছে বিজেপি-শিবসেনা। হরিয়ানায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও, বৃহত্তম দল বিজেপিই। ফলে সেখানেও সরকার গড়ার সম্ভাবনা বেশি গেরুয়া শিবিরেরই। বৃহস্পতিবার দুই রাজ্যে ফল বেরনোর পরই ভালো ফলের জন্য মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার মানুষ এবং বিজেপি নেতা-কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু এই দুই রাজ্য এবং সারা দেশে অনুষ্ঠিত হওয়া ৫১ টি বিধানসভা ও ২ টি লোকসভার ফল দেখে বিরোধীরা বলতে শুরু করেছেন, বিজেপির লোকসভা ভোটের হাওয়া কমার ইঙ্গিত স্পষ্ট। বিরোধীদের দাবি, ধাক্কা খেয়েছে মোদী-অমিত শাহের অশ্বমেধের ঘোড়া। কিন্তু সত্যিই কি তাই? লোকসভার পর প্রথম বড় ভোটে সত্যিই কি হোঁচট খেয়েছে বিজেপি? কী বলছে নির্বাচনী ফলের পাটিগণিত?
মহারাষ্ট্রে ২৮৮ টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ১০৫ টি। অন্যদিকে, হরিয়ানায় ৯০ টির মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৪০ টি আসন। এর বাইরে ১৭ টি রাজ্যের ৫১ টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই ৫১ টির মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ১৭ টি আসন। অর্থাৎ, মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচন ও ১৭ রাজ্যের উপ-নির্বাচন মিলে মোট ৪২৯ টি আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছে ১৬২ টি, যা মোট আসনের প্রায় ৩৮ শতাংশ।
লোকসভা নির্বাচনের পর কংগ্রেসকে যতটা ছন্নছাড়া দেখাচ্ছিল, তার থেকে তারা অনেকটাই ভালো ফল করেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানা, দুই রাজ্যেই কংগ্রেসের ফল যতটা ভাবা গিয়েছিল, তার থেকে ভালো হয়েছে। পাশাপাশি, ১৭ রাজ্যের উপ-নির্বাচনে কংগ্রেসের দখলে এসেছে ১১ টি আসন। বাকি আসনগুলো গিয়েছে দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের খাতায়।
কী অবস্থা উপ-নির্বাচনের রাজ্যওয়াড়ি হিসেবে। উত্তর প্রদেশে ১১ টি আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছে ৭ টি আসনে। সমাজবাদী পার্টি পেয়েছে ৩ টি আসন। বিজেপির জোটসঙ্গী আপনা দল পেয়েছে ১ টি। অন্যদিকে, গুজরাতে ৬ টি আসনের মধ্যে ৩ টি করে আসন পেয়েছে বিজেপি ও কংগ্রেস। অসমে ৪ টি আসনের মধ্যে ৩ টি দখল করেছে বিজেপি। হিমাচল প্রদেশ ও সিকিমে বিজেপি পেয়েছে ২ টি করে আসন। কেরলে কংগ্রেস পেয়েছে ২ টি আসন। ছত্তিসগঢ়, রাজস্থান এবং মধ্য প্রদেশে ১ টি করে উপ-নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন কংগ্রেস প্রার্থীরা।

অন্যদিকে দেশে ২ টি লোকসভার উপ নির্বাচনেরও ফল বেরিয়েছে। বিহারের একটি আসনে জয়লাভ করেছে এলজেপি এবং মহারাষ্ট্রের সাতারা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়ে জয় পেয়েছেন এনসিপি প্রার্থী।
হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনে গতবারের থেকে আসন কমেছে বিজেপির। যদিও হরিয়ানায় মনোহরলাল খট্টর এবং মহারাষ্ট্রে ফড়নবিসই যে দ্বিতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, লোকসভার তুমুল মোদী হাওয়া কি বিধানসভা নির্বাচনে দাগ কাটতে ব্যর্থ? যদিও এই প্রশ্নকে গুরুত্ব দিচ্ছে না গেরুয়া শিবির। বিজেপির বক্তব্য, লোকসভায় মানুষ মোদীকে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী করার জন্য ভোট দিয়েছিলেন। রাজ্যের ভোটে অনেক স্থানীয় ইস্যু কাজ করে। তাছাড়া, পাঁচ বছর সরকার চালানোর পর তা ফের ধরে রাখাই যথেষ্ট সাফল্য।

Comments are closed.