ধর্ষকদের জনসমক্ষে পিটিয়ে মারা উচিত, রাজ্যসভায় মন্তব্য সাংসদ জয়া বচ্চনের

হায়দরাবাদে তরুণী চিকিৎসকের গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনার আঁচ এসে পড়ল সোমবার সংসদের দুই কক্ষেই। তার মধ্যেই সমাজবাদী পার্টির প্রবীণ সাংসদ জয়া বচ্চন রাজ্যসভায় ধর্ষকদের জনসমক্ষে পিটিয়ে মারা উচিত বলে মন্তব্য করে বসলেন। সরকারের উদ্দেশে জয়ার মন্তব্য, সরকার যদি মহিলাদের নিরাপত্তা না-ই দিতে পারে, তা হলে ধর্ষকদের বিচার হোক সাধারণ মানুষের হাতে। তাদের জনতার হাতে ছেড়ে দেওয়া হোক। তারপর জনতা বুঝে নেবে। সাংসদের মতে, ধর্ষকদের সবক শেখানোর জন্য এটাই আদর্শ সময়।
এদিন রাজ্যসভায় বলতে গিয়ে আবেগবিহ্বল হয়ে পড়েন জয়া। তাঁর কথায়, আমি জানি না, ঠিক কতবার এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে বলতে উঠেছি। নির্ভয়া হোক বা কাঠুয়া ধর্ষণকাণ্ড কিংবা তেলেঙ্গানা- এখন সরকারের কাছে মানুষ একটা সঠিক ও নির্দিষ্ট জবাব চাইছে। এরপরেই সরকারের উদ্দেশে একগুচ্ছ প্রশ্নবাণ ছুঁড়ে জয়া বলেন, এইসব ঘটনার প্রেক্ষিতে সরকার কী করছে? কীভাবে এসব ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করছে? আদৌ বিচার পেয়েছেন নির্যাতিতারা? আমি কারও নাম নিতে চাই না, কিন্তু এর জন্য কি নিরাপত্তা দায়ী নয়? কেন এসব বন্ধ হচ্ছে না?
সারা দেশে যে হারে গণপিটুনির ঘটনা হচ্ছে, তাতে দেশের সর্ব স্তরের মানুষ উদ্বিগ্ন। সংসদে এবং বিভিন্ন রাজ্যের আইনসভায় গণপিটুনি রোখার জন্য বিল আনার চেষ্টা হচ্ছে। কখনও গোমাংস নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ, কখনও বাড়িতে গোমাংস রাখার অভিযোগ, কখনও শিশু চুরির সন্দেহ, কখনও আবার জয় শ্রীরাম না বলার অভিযোগ- এরকম নানা ঘটনায় গত কয়েক মাসে গণপিটুনিতে মানুষের মৃত্যু কিংবা জখম হওয়ার মতো অজস্র ঘটনা ঘটেছে। সে সবকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়েছে, দাঙ্গা হাঙ্গামা হয়েছে। তার জন্যই আইন করে গণপিটুনি ঠেকানোর কথা ভাবা হচ্ছে। মাস কয়েক আগেই এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দিয়েছিলেন বিদ্বজ্জনেরা। ধর্ষণের ঘটনার নিন্দা সবাই করেন। হায়দ্রাবাদের ঘটনার প্রতিবাদে গোটা দেশ উত্তাল। সবাই চাইছে দোষীদের চরম শাস্তি। কিন্তু তাই বলে জয়া বচ্চনের মতো একজন প্রবীণ এবং বিচক্ষণ সাংসদ কেমন করে গণপিটুনির পক্ষে সাফাই গাইলেন, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে নানা মহলে। তবে এ নিয়ে নানা মুনির নানা মত। কেউ বলছেন, জয়া বচ্চন ঠিকই বলেছেন। আবার কেউ বলছেন, তিনি ঠিক করেননি।
সোমবার সংসদের দুই কক্ষেই হায়দ্রাবাদের ঘটনা নিয়ে হইচই করেন বিরোধীরা। উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, ওই ঘটনা নিয়ে সভায় আলোচনা হতেই পারে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, এই ঘটনায় সরকারও উদ্বিগ্ন। দলমত নির্বিশেষে এর নিন্দা করা উচিত। যে পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল, তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে।

Comments are closed.