মোদীর সঙ্গে দেখা করা নিয়ে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ চন্দ্রবাবু নাইডুর, বিজেপি বিরোধী ফ্রন্টে ভাঙনের ইঙ্গিত?

বিজেপি বিরোধী দলগুলির মধ্যে কি মতভেদ শুরু হয়ে গেল? অন্তত তেমনই ইঙ্গিত মিলছে জাতীয় রাজনীতিতে।
অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু আক্রমণ করলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওকে। একদিকে কে সি আর ফেডারেল ফ্রন্ট গড়তে বিভিন্ন রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করতে যাচ্ছেন, আর অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন বলে কটাক্ষ করেন চন্দ্রবাবু।
রবিবার ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক এবং সোমবার এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপি ও কংগ্রেস বিরোধী ফেডারেল ফ্রন্ট গড়তে আলোচনা করে গিয়েছেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী। কে সি আর দলিত নেত্রী মায়াবতী এবং তাঁরই বিরোধী অখিলেশ যাদবের সঙ্গেও আলোচনা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সূত্রের খবর, অখিলেশের সঙ্গে আগামী মাসের ৬ তারিখ আলোচনা করবেন তিনি, তবে মায়াবতী এখনও পর্যন্ত সময় দেননি।
এরই মধ্যে মমতার সঙ্গে সাক্ষাতের ঠিক দু’দিন পরেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যের কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে দিল্লি গিয়েছেন তিনি। তেলেঙ্গানার অনগ্রসর শ্রেণীর সার্বিক উন্নয়ন, তেলেঙ্গানার জন্য আলাদা হাইকোর্ট ইত্যাদি একাধিক ইস্যু নিয়ে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন কে সি আর। আর এতেই চটেছেন চন্দ্রবাবু। তিনি বলেন, একদিকে বিজেপি বিরোধী ফেডারেল ফ্রন্ট গড়তে আলোচনা অন্যদিকে, ওই সরকারের সঙ্গেই কথ বলতে দিল্লি উড়ে যাওয়া, বোঝা যাচ্ছে না কে সি আর-এর লক্ষ্য কী। তিনি কে সি আর-এর এই পদক্ষেপকে দ্বিচারিতা বলে অভিযোগ করেন। চন্দ্রবাবু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিছক রাজ্যের সমস্যা সমাধানের জন্য, নাকি নিজের ফেডারেল ফ্রন্ট গড়ার কথা জানাতে গিয়েছিলেন কে সি আর?
চন্দ্রবাবু কে সি আরের ফেডারেল ফ্রন্টকে কটাক্ষ করে বলেন, ভারতে কেবল দুটি ফ্রন্টের অস্তিত্ব থাকবে। একটি বিজেপি পরিচালিত ফ্রন্ট, অন্যটি বিজেপি বিরোধী কংগ্রেস ফ্রন্ট।
প্রসঙ্গত, তেলেঙ্গানায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে কে সি আরের দলকে বিজেপির ‘বি টিম’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন রাহুল গান্ধী ও চন্দ্রবাবু নাইডু। যদিও, বিজেপি বা কংগ্রেস কারও সঙ্গে জোট করেননি কে সি আর। নির্বাচনের ফলেও দেখা যায়, কংগ্রেস এবং বিজেপিকে কার্যত ধূলিস্যাৎ করে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে তেলেঙ্গানার মসনদে বসেছেন কে সি আর। ঠিক এর পরেই তিনি রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশের রাজনীতিতে পা রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এক্ষেত্রেও বিজেপি বা কংগ্রেস কারও সঙ্গে না গিয়ে অন্যান্য রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে ফেডারেল ফ্রন্ট গড়তে উদ্যোগ নিয়েছেন। যা ভালোভাবে নিচ্ছেন না প্রতিবেশী মুখ্যমন্ত্রী তথা রাহুলের জোট সঙ্গী চন্দ্রবাবু নাইডু।
কিছুদিন আগে, দিল্লিতে বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলিকে এক ছাতার তলায় এনে কংগ্রেস পরিচালিত জোট গড়ার বৈঠক হয়। যে বৈঠক মূলত চন্দ্রবাবুর উদ্যোগেই সংগঠিত হয়েছিল। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গিয়েছিলেন, কিন্তু অনুপস্থিত ছিলেন নবীন পট্টনায়েক, মায়াবতী ও অখিলেশ যাদবরা। আর কে সি আর ফেডারেল ফ্রন্ট গড়তে ঠিক তাঁদের সঙ্গেই আলোচনায় আগ্রহী হয়েছেন, যা ভালো চোখে দেখছেন না চন্দ্রবাবুরা।

Comments are closed.