বামেদের ব্রিগেড থেকে কি নতুন কোনও দিশা মিলল, প্রশ্ন সমাবেশে আসা কর্মী-সমর্থক থেকে অনেক নেতারই

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ব্রিগেডে গেলেন, কিন্তু গাড়ি থেকে নামলেন না শারীরিক অসুস্থতার জন্য। গাড়িতে বসেই শুনলেন বক্তৃতা। কানহাইয়া কুমার এলেন না ঘাড়ের ব্যথায়। বিজেপি এবং তৃণমূল, দু’দলকে দেশ এবং রাজ্য থেকে হঠানোর স্লোগানকে সামনে রেখে যে ব্রিগেডের ডাক দিয়েছিল বামেরা, তাতে মাঠও ভরল কম-বেশি। কিন্তু বক্তাদের ভাষণে সেই জোশ যেন এল না কিছুতেই।

রাজ্যের শিল্পায়ন থেকে শুরু করে বিজেপি-তৃণমূল মুদ্রার দু’পিঠ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, সারদা-নারদা, চৌকিদার হঠাও সব কথাই ঘুরে-ফিরে এল প্রায় সব বক্তার কথায়, কিন্তু সেই জান এল না সমাবেশে যাতে ব্রিগেড থেকে ফিরে নিজের বাড়ির বুথে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন বাম কর্মী-সমর্থকরা।
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। কয়েকদিন আগেই এই ব্রিগেড সমাবেশ থেকে দেশের প্রায় সব বিরোধী দলকে সঙ্গে নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একদিন আগেই ঠাকুরনগর এবং দুর্গাপুরের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে পালটা আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীকে পালটা নিশানা করেন তৃণমূল নেত্রীও। লোকসভার আগে বাংলার রাজনীতিতে যখন ক্রমে মেরুকরণের প্রবণতা স্পষ্ট, তখন বামেদের সমাবেশ থেকে মিলল না নতুন কোনও উপাদান।
মোদী সরকারকে হঠাতে বিরোধী দলগুলির ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিলেন সীতারাম ইয়েচুরি। সিঙ্গুর প্রসঙ্গ তুলে আনলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। বলেন, এই সরকারের আমলে শিল্প ধ্বংস হয়েছে। সারদা-নারদা থেকে রাফাল প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল এবং বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ করলেন মহম্মদ সেলিম।

কিন্তু সামনে লোকসভা ভোটে গোটা দেশে সিপিএমের স্ট্র্যাটেজি কী, তার কোনও দিশা মিলল না এদিনের সমাবেশ থেকে। বিশেষ করে, কংগ্রেস এবং আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে সম্পর্ক কী হবে? যেখানে সিপিএম শক্তিশালী নয়, সেখানে অন্য বিজেপি বিরোধী দলগুলির সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণ কী হবে? কেরল এবং বাংলা দুই রাজ্যের সিপিএম কংগ্রেসের প্রশ্নে আড়াআড়ি ভাগ হয়েছে গিয়েছে, তার সমাধান হবে কী করে? এমন একাধিক প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব বা তেমন ইঙ্গিত মিলল না এদিনের বামেদের ব্রিগেডে!

Comments are closed.