মুম্বইয়ে করোনাভাইরাসের উপসর্গ প্রকাশ পাওয়া থেকে মৃত্যুর ব্যবধানের গড় সময় ৬.৪ দিন। আর হাসপাতালে ভর্তি থেকে রোগী মৃত্যুর সময়ের ব্যবধান গড়ে ২.৪ দিন। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলো ব্রিহন মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের (BMC) ডেথ অডিট রিপোর্ট।
করোনায় ভয়ঙ্করভাবে প্রভাবিত মহারাষ্ট্র। রাজধানী মুম্বইয়ে এই সরকারি কমিটির রিপোর্ট বলছে, করোনা আক্রান্তরা অনেক দেরিতে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন এবং চিকিৎসারত অবস্থায় অল্প সময়ের ব্যবধানে প্রাণ হারাচ্ছেন।
শুক্রবার পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩০০, যার মধ্যে মুম্বইয়ে ১৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মুম্বইয়ে ১৩৩ টি করোনা মৃত্যুর রিপোর্ট খতিয়ে দেখে ১১ টি পরামর্শ দিয়েছে এই অডিট প্যানেল। তাতে বলা হয়েছে, আগামী ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ মুম্বইয়ের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে দৃঢ়ভাবে প্রস্তুত রাখতে হবে। সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে করোনার উপসর্গ দেখে আগেই রোগী চিহ্নিত করার উপর। এতে মৃত্যু ঠেকানো যাবে বলে মনে করছে অডিট কমিটি। বলা হয়েছে, অল্প জ্বর, কম রক্তচাপ, ঠোঁট নীলচে হয়ে যাওয়া, শ্বাসের সমস্যা, বুকে ব্যথার মতো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত শারীরিক পরীক্ষা করা দরকার।
মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্য দফতরের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর ডাক্তার অর্চণা পাটিলের নেতৃত্বাধীন এই অডিট কমিটি জানিয়েছে, করোনায় মৃতদের মধ্যে ৭৯ শতাংশ মারা গিয়েছেন কো-মর্বিডিটি-তে। ৭৪ টি কেসে রোগী হয় হাইপারটেনশন, না হলে ডায়াবেটিস কিংবা, দুয়েই আক্রান্ত ছিলেন। ১৪ টি কেসে রোগীর ফুসফুসের সমস্যা এবং আটটিতে কিডনির সমস্যা ছিল।
মহারাষ্ট্র সরকার গঠিত এই কমিটি জানাচ্ছে, ১৩৩ জন মৃতের মধ্যে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে ভর্তির দু দিনের মধ্যে। ৩৪ জন মারা গিয়েছেন হাসপাতালে আসার ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে এবং বাকিদের মৃত্যু ৫ দিনের মধ্যে।
BMC আরও জানাচ্ছে, মোট ২৮ জনের অন্যান্য কোনও রোগ ছিল না। তারা করোনা সংক্রমণেই প্রাণ হারিয়েছেন। ৬২ থেকে ৭০ বছর বয়সীরা করোনায় সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত। এই বয়সী মোট ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে মহারাষ্ট্রে। ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়স্কদের মধ্যে ৩৭ জন মারা গিয়েছেন।
অডিট কমিটির পরামর্শ আরও দ্রুত গতিতে টেস্ট করতে হবে, করোনার চিকিৎসার সুবিধা থাকা হাসপাতালগুলিতে নবজাতকদের জন্য দুটি আলাদা ইনটেন্সিভ কেয়ারের ব্যবস্থা রাখতে হবে, যার একটিতে গুরুতর আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হবে।