জি নিউজের সুধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে মহুয়া মৈত্র, মানহানি মামলায় স্থগিতাদেশকে চ্যালেঞ্জ

সংসদে প্রথমবার বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফ্যাসিবাদের ৭ লক্ষণের কথা উল্লেখ করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। বিরোধীরা বলেন, কৃষ্ণনগরের সাংসদের তীক্ষ্ণ ভাষণে ফ্যাসিবাদের ৭ টি লক্ষণ, বর্তমান ভারতে আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক। অন্যদিকে সরকারপন্থী সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি ছিল, সংসদে দাঁড়িয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে লেখা মার্টিন লংম্যানের একটি প্রবন্ধকে আগাগোড়া টুকে দিয়েছেন মহুয়া। যদিও সেই প্রবন্ধের লেখক মার্টিন লংম্যান নিজে জানিয়ে দেন, মহুয়া তাঁর প্রবন্ধ থেকে নকল করেননি। কিন্তু বিতর্কে ছেদ পড়েনি। এবার এই ইস্যুতে ফৌজদারি মানহানির মামলায় স্থগিতাদেশকে চ্যালেঞ্জ করে জি নিউজের এডিটর-ইন-চিফ সুধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে গেলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।

লোকসভার সদস্য হিসেবে শপথ নিয়ে গত ২৫ শে জুন তোলপাড় করা ভাষণ দেন প্রথমবার সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সরাসরি আক্রমণ করেন মোদী জমানার কার্যপদ্ধতিকে। অথচ মহুয়ার ভাষণের পরপরই বিজেপি সাংসদ সুভাষ চন্দ্রের নিউজ চ্যানেল জি নিউজ একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। তাতে সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের এডিটর-ইন-চিফ সুধীর চৌধুরী অভিযোগ তোলেন, মহুয়া তাঁর ভাষণের পুরোটাই টুকেছেন মার্কিন প্রাবন্ধিক মার্টিন লংম্যানের একটি প্রবন্ধ থেকে। যে প্রবন্ধে লংম্যান হুবহু একই ভাষায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছিলেন। এবং ফ্যাসিবাদের ৭ লক্ষণের কথা লিখেছিলেন। উল্টোদিকে মহুয়া তাঁর ভাষণের শেষদিকে তথ্যসূত্র উল্লেখ করেছিলেন। তাতে তৃণমূল সাংসদ জানিয়েছিলেন আমেরিকার হলোকাস্ট মেমোরিয়ালের একটি পোস্টারের কথা। যেখানে ফ্যাসিবাদের ৭ লক্ষণের কথা লেখা আছে। লংম্যানও সেই পোস্টার থেকেই উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। এরপরই জি নিউজের সুধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে নয়াদিল্লির পাতিয়ালা হাউজ কোর্টে ফৌজদারি মানহানির মোকদ্দমা করেন মহুয়া। মিথ্যে মানহানির মামলা দায়েরের জন্য মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ফৌজদারি প্রক্রিয়া শুরুর দাবি নিয়ে পাল্টা আদালতে যান সুধীর চৌধুরীও। এই মামলাটি বর্তমানে আদালতের বিচারাধীন।

জি নিউজের অ্যাঙ্কর তথা প্রধান সম্পাদক সুধীর চৌধুরী দায়রা আদালতে জানান, নগর দায়রা বিচারক ৩৪০ ধারায় তাঁর বক্তব্য না শুনেই মামলা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এরপরই দায়রা আদালত মামলার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে।

এই স্থগিতাদেশকেই চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মহুয়া মৈত্র। তাঁর আইনজীবী নিত্যা রামাকৃষ্ণণের সওয়াল, দায়রা আদালত যে রায় দিয়েছে, তা তার এক্তিয়ার বহির্ভূত।

দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর দিল্লি হাইকোর্ট আগামী সোমবারের মধ্যে সাংসদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সুধীর চৌধুরীকে তাঁর জবাব লিখিতভাবে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ১৮ ই অক্টোবর অতিরিক্ত দায়রা আদালতে মামলার পরবর্তী শুনানি।

Comments are closed.