পড়ুয়া-সুরক্ষার কথা ভেবে করোনা কালে স্থগিত হোক জয়েন্ট-নিট, কেন্দ্রকে ফের আর্জি মমতার

আর কয়েকদিন পরই সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষা (জয়েন্ট-এন্ট্রান্স মেইনস) এবং ডাক্তারি প্রবেশিকা (নিট-ইউজি) পরীক্ষা হতে চলেছে। তার আগে সোমবার ফের কেন্দ্রের কাছে পরীক্ষা স্থগিতের আর্জি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

সোমবার সকালে ট্যুইটারে মমতা লেখেন, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের চূড়ান্ত টার্মের পরীক্ষা নিয়ে ইউজিসির (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন) নির্দেশিকার বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজির সঙ্গে আমাদের শেষ ভিডিও কনফারেন্সে সোচ্চার হয়েছিলাম। কারণ এতে পড়ুয়াদের জীবন বড়সড় বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রীকে ট্যুইটে উদ্ধৃত করে লিখেছেন, ”আমি আরও একবার আর্জি জানাচ্ছি, ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে, ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে জয়েন্ট এবং নিট পরীক্ষা স্থগিত করা হোক।”

 

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি আগেই বলেছিলেন, ইউজিসির গাইডলাইন অনুযায়ী রাজ্যে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। এই মহামারি পরিস্থিতিতে রাজ্য এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না যাতে ব্যাপক অংশের ছাত্রছাত্রীকে বিপদের মুখে পড়তে হয়।

জয়েন্ট এন্ট্রান্স বা নিট পরীক্ষা সাধারণত এপ্রিল-মে মাসেই হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সুরক্ষাবিধির কথা মাথায় রেখে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। প্রথমে জয়েন্ট পরীক্ষার দিন নির্ধারণ হয়েছিল ১৮ থেকে ২৩ জুলাই এবং নিট পরীক্ষার দিন ঠিক হয়েছিল ২৬ জুলাই। কিন্তু দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় ফের পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে ঠিক হয় সেপ্টেম্বরের ১-৬ ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ১৩ তারিখ ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা হবে। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ১১ জন ছাত্র ও তাঁদের অভিভাবকরা। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চ জানায়, করোনা সংক্রমণের কারণে জীবন থমকে থাকবে না। স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের কারণে এমনিতেই ছাত্রছাত্রীদের কেরিয়ারের অনেক ক্ষতি হয়েছে। পরীক্ষা পিছিয়ে দিলে তাদের আরও একটা বছর নষ্ট হবে। সেদিকটা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট রায়ের প্রেক্ষিতে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল জানান, সাড়ে ছ’লক্ষের বেশি পরীক্ষার্থী তাঁদের অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করে ফেলেছেন। এখন আর পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের সুরক্ষাবিধির কথা ভেবে ফের কেন্দ্রের কাছে পরীক্ষা স্থগিতের আবেদন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।

Comments are closed.