আম্বেদকরের নামে শপথ, বাংলায় এনআরসি হতে দেব না, মেয়ো রোডে হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর

বাংলায় কিছুতেই এনআরসি করতে দেওয়া হবে না বলে ফের জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। শুক্রবার মেয়ো রোডে সংহতি দিবসের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলায় বিভেদের রাজনীতি হতে দেব না। বি আর আম্বেদকরের মৃত্যুদিবসে এই শপথ নিলাম।
সংসদ থেকে নির্বাচনী প্রচার, সর্বত্রই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ জোর গলায় ঘোষণা করছেন, দেশ জুড়েই এনআরসি হবে। সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডে ভোটের প্রচারে গিয়ে অমিত জানান, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগেই সারা দেশে এনআরসি করা হবে। আগামী সপ্তাহেই ফের সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করছে মোদী সরকার। যে বিলে ছয় অমুসলিম ধর্মের শরণার্থীদের এ দেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মেয়ো রোডের সংহতি দিবসের মঞ্চ থেকে মমতা ফের বলেন, প্রাণ থাকতে ধর্মের ভিত্তিতে আমি এনআরসি করতে দেব না।
তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, বিজেপির এনআরসি প্ররোচনায় এ রাজ্যের ৩০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশজুড়েই সাধারণ মানুষের মধ্যে এনআরসি ভীতি ঢুকে গিয়েছে। তিনি বলেন, বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের প্ররোচনায় যদি কারও মৃত্যু হয় তার দায়িত্ব নেবেন তো তাঁরা? বাংলায় ৩০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে, একই কারণে অসমে কত মৃত্যু হয়েছে, তার কোনও রেকর্ড নেই।
এনআরসি-র বিরোধিতা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কীসের নাগরিকত্ব কাকে দেবেন? স্বাধীনতার এত বছর পর যাঁরা দীর্ঘদিন এ দেশে বাস করলেন, ভোটাধিকার প্রয়োগ করলেন, কেবল ধর্মের ভেদাভেদে তাড়িয়ে দেওয়ার হবে তাঁদের? মমতার কটাক্ষ, এতগুলো ‘ভুয়ো’ নাগরিকের ভোটে জিতে এতবার যে সরকার তৈরি হয়েছে, সেই সরকারও তবে ভুয়ো? মমতার অভিযোগ, ধর্মীয় ভেদাভেদ বিজেপির দলীয় ইস্যু। এর মাধ্যমে দেশভাগের চক্রান্ত হচ্ছে। মমতার কথায়, ধর্মের ভেদাভেদ না করে এনআরসি করুন, রাস্তায় দাঁড়িয়ে সমর্থন করে দেব। কিন্তু কাউকে দেব, কাউকে দেব না, এটা কী?
তৃণমূল নেত্রীর হুঁশিয়ারি, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করিয়ে আনতে পারে বিজেপি, কিন্তু বাংলায় ধর্মের নামে ভেদাভেদ হতে দেবেন না। কেউ সমর্থন করুন বা না করুন, এনআরসি নিয়ে তাঁদের অবস্থানের কোনও বদল হবে না। এর জন্য মৃত্যু হলেও তিনি পিছপা হবেন না। এনআরসি-র বিরোধিতায় প্রয়োজনে বৃহত্তর গণ আন্দোলনের পথে যাবেন তাঁরা, সাফ জানান মমতা।

Comments are closed.