বাংলার গণনায় অগ্নিপরীক্ষার সামনে প্রশান্ত কিশোর

হাতে আর মাত্র ১২ ঘণ্টা। রবিবার এই সময়ে পরিষ্কার পিকে থাকলেন না ছাড়লেন। বিজেপি বাংলায় ২ অঙ্ক পেরোলে ভোট কুশলীর পেশা ছাড়বেন বলে প্রশান্ত কিশোর গত বছরই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে রেখেছেন।

কী হয়েছিল? 

বোলপুরে রোড শো করেন অমিত শাহ। রোড শোর সম্প্রচার নিয়ে আপত্তি জানায় তৃণমূল। তাদের অভিযোগ ছিল, বিজেপির সমর্থক হয়ে মিডিয়া একটা ছোট রোড শোকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বড় করে দেখাচ্ছে। এটা মানুষকে বিভ্রান্ত করার পরিকল্পনা। ২১ ডিসেম্বর, ২০২০, তৃণমূলের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর ট্যুইট করেন, সমর্থক মিডিয়া হাজার ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখালেও বাস্তবতা হল, বিজেপি বাংলায় ২ অঙ্ক পেরোতে হিমশিম খাবে। 

তারপর বিশেষ দ্রষ্টব্য দিয়ে লিখেছিলেন, দয়া করে আমার এই ট্যুইটটা সেভ করে রাখুন। যদি বিজেপি এর চেয়ে ভালো কিছু করে তাহলে আমার আর এই জায়গায় থাকার প্রয়োজন নেই। 

পিকের এই ট্যুইট নিয়ে বহু তর্ক বিতর্ক হয়েছে। পিকে নিজে একাধিক সাক্ষাৎকারে এই কথা জোর দিয়ে বলেছেন, বিজেপি ১০০ টপকালে তিনি পেশা ছেড়ে দেবেন।

ক্ষমতায় কে আসছে তা নিয়ে এক্সিট পোলে এক্সিট পোলে বিভেদ থাকলেও প্রত্যেকেই মোটামুটি বিজেপিকে ১০০ এর বেশি দেখিয়েছে। অর্থাৎ বিজেপির ১০০ পেরনো নিয়ে এক্সিট পোলের কর্মকর্তাদের অন্তত কোনও সংশয় নেই। অতঃপর অপেক্ষা এক্সাক্ট ফলের। 

এখন প্রশ্ন হল, কী করবেন পিকে? 

রাজনৈতিক মহল পিকের দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছে মূলত দুটি কারণে। প্রথমত রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে ভারতের সংসদীয় বৃত্তে আর নতুন করে কিছু পাওয়ার নেই তাঁর, এমনটা মনে করতে পারেন পিকে। 

দ্বিতীয়ত বিজেপি বাংলা জয়ে সফল হলে তা জাতীয় ক্ষেত্রে হবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। অনেকেই মনে করেন এতে জাতীয় রাজনীতির অভিমুখ বদলে যেতে পারে। পর্যবেক্ষকদের একটা অংশ বলছেন, প্রশান্ত কিশোর ইদানীং নিজের রাজনৈতিক সত্ত্বার কথা বলছেন। জানাচ্ছেন, আবার একবার রাজনীতিতে চেষ্টা করতে চান। কোনও রাখঢাক না করে তিনি সাক্ষাৎকারের পর সাক্ষাৎকারে জানাচ্ছেন, প্রথমবার জেডিইউয়ের সময় কিছু ভুল হয়েছিল এবং তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। এবার সফল হতে আবার রাজনীতিতে ফিরতে চান। এই বদলে যাওয়া প্রেক্ষাপটেই কী পিকে রাজনীতিতে সেকেন্ড ইনিংস শুরু করতে চান? পিকের নিজের কথায় সহি সময় কি এটাই? উত্তর দেবে ২ মে।

তবুও প্রশ্ন… 

২১ ডিসেম্বরের আগেই পিকের সংস্থার সঙ্গে পাঞ্জাবের ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল বলে কাগজে বেরিয়েছিল। পিকে ভোট কুশলীর কাজ ছাড়লে সেই চুক্তিও কি বাতিল হবে? নাকি আইপ্যাক নিজের কাজ চালাবে, শুধু পিকে থাকবেন না। 

ভোটের সময় আচমকা সোশ্যাল মিডিয়ায় পিকের জেগে ওঠা অনেকেরই চোখে লেগেছে। পিকে ধারাবাহিক ভাবে মোদী সরকারের করোনা মোকাবিলার সমালোচনা করে এসেছেন। সম্প্রতি তাতে যেন লেগেছে কটাক্ষের প্রলেপ। আবার অন্য একটি পক্ষের দাবি গত বছর করোনা লকডাউনের সময় পিকে একইভাবে মোদী সরকারের সমালোচনা করেছিলেন। এতে নতুনত্ব কী? 

 

প্রশান্ত কিশোরের ট্যুইটার হ্যান্ডলে এই ট্যুইটটি পিন করা আছে। পেজে গেলে প্রথমেই চোখে পড়বে। এখনও প্রবল আত্মবিশ্বাসী প্রশান্ত কিশোর!

Comments are closed.