ইতিহাসের বিকৃতি ঘটানো কিংবা নিজের মতো করে ইতিহাস বদলে দেওয়ার অভিযোগ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে বহুবার উঠেছে। বিশেষ করে দিল্লিতে বিজেপি সরকার গড়ার পর তাদের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ উঠেছে, ইতিহাস বইয়ের বদল ঘটানোর। টিপু সুলতান থেকে শুরু করে আকবর, নানা ঐতিহাসিক চরিত্রকে কালিমালিপ্ত করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। কিন্তু বিজেপি পরিচালিত রাজস্থানে স্বাধীনতা যোদ্ধা বাল গঙ্গাধর তিলককে নিয়ে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা সব কিছুকে ছাপিয়ে গেছে। রাজস্থানের অষ্টম শ্রেণীর সমাজ বিদ্যার বইয়ে তিলককে ‘সন্ত্রাসবাদের জনক’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এই বছরের শেষেই রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বিষয়টিকে নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই আসরে নেমেছে কংগ্রেস।
জানা গিয়েছে, রাজস্থান শিক্ষা অষ্টম শ্রেণীর সমাজবিদ্যার পাঠ্যপুস্তকে প্রখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী বাল গঙ্গাধর তিলককে ‘সন্ত্রাসবাদের জনক’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই ঘটনাই জন্ম দিয়েছে নতুন বিতর্কের। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মথুরার একটি ছাপাখানা থেকে ছাপানো বইটি রাজস্থানের একাধিক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে সমাজবিদ্যার পাঠ্যপুস্তক হিসেবে পড়ানো হয়। সেই পাঠ্য পুস্তকের ২২৭ পৃষ্ঠায় ২২ নম্বর অধ্যায়ে, বাল গঙ্গাধর তিলককে ‘সন্ত্রাসবাদের জনক’ বলা হয়েছে। অধ্যায়টির নাম ‘১৮ ও ১৯ শতকের স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘটনাবলী’। যেখানে পরিষ্কার বলা রয়েছে ‘বাল গঙ্গাধর তিলক বুঝতে পেরেছিলেন ইংরেজদের ওকালতি করে দেশবাসী কিছুই পাবেন না। তাই শিবাজি ও গনপতি পুজোর মাধ্যমে জনচেতনার উন্মেষ ঘটিয়ে তিনি স্বাধীনতার পথ দেখিয়েছিলেন। সে কারণেই তিলককে ‘সন্ত্রাসবাদের জনক’ বলা হয়।’ বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে জলঘোলা শুরু হয়েছে। রাজস্থান বেসরকারি বিদ্যালয়ের উপদেষ্টা কমিটির প্রধান কৈলাস শর্মা জানান, ‘এই ধরনের ঘটনা সত্যিই নিন্দনীয়, ইতিহাস সম্পর্কিত কিছু প্রকাশ করার আগে উচিত ঐতিহাসিকদের থেকে সেই বিষয়ে পরিষ্কার জেনে নেওয়া’। ঘটনাটির পরিপ্রেক্ষিতে রাজস্থান সরকারকে আক্রমণ করতে পিছু পা হননি বিরোধীরা। রাজস্থান কংগ্রেসের সভাপতি সচিন পাইলট ট্যুইটে রাজস্থানে বিজেপি সরকারের ইতিহাস বিকৃতির প্রয়াসকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। এই প্রথম নয়, কিছুদিন আগে ইতিহাস বই থেকে জওহরলাল নেহেরুর অধ্যায়কে ছেঁটে ফেলার কথা বলেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন রাজস্থানের বিজেপি নেতারা।