রিজার্ভ ব্যাঙ্ক: ধুকছে দেশের অর্থনীতি, আগামী ১ বছরে আরও বাড়বে এনপিএর বোঝা

আগামী এক বছরে ব্যাঙ্কগুলিতে অনাদায়ি ঋণের বোঝা আরও বাড়তে পারে, জানাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)। শুক্রবার আরবিআই জানিয়েছে, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্যাঙ্কগুলিতে অনাদায়ি ঋণ পৌঁছবে ৯.৯ শতাংশে। যা ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ছিল ৯.৩ শতাংশ।

এই প্রেক্ষিতে অর্থনীতি মূল্যায়নকারী সংস্থা ইক্রা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলির ঋণ বৃদ্ধির হার গত ৫৮ বছরের রেকর্ড ভেঙে তলানিতে নামতে চলেছে।
শুক্রবার দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। সেই বৈঠকের আগেই আরবিআই-এর তরফে এই পূর্বাভাস প্রকাশিত হয়। আরবিআই-এর ‘ফিনান্সিয়াল স্টেবিলিটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনীতির বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য দুটি জায়গা হল বাজারের কেনাবেচা এবং লগ্নি। কিন্তু সম্প্রতি এই দুই ক্ষেত্রেই প্রতিবন্ধক পরিবেশ। রিপোর্টে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর বাজারে চাহিদা আরও কমেছে। তাই বৃদ্ধির হারও কমেছে।
প্রসঙ্গত, শেষ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার গত ৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হয়েছে। অন্যদিকে বাজারে চাহিদার অভাব তো রয়েইছে, তার সঙ্গে রফতানিতেও ভাটা পড়েছে। আরবিআই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে মন্দার জেরে ভারতের রফতানিও ঝিমিয়ে পড়বে। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় বাজারে কেনাকাটা ও লগ্নিকে চাঙ্গা করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন বলে মনে করছে আরবিআই।
দেশের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের সঙ্গে একসুরে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও জানাচ্ছেন, ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্র বড় আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে। আরবিআই-র ডেপুটি গভর্নর এইচ আর খান বলেন, ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি না পেলে স্বাভাবিকভাবেই এনপিএ-র হারও বাড়বে। অর্থনৈতিক মূল্যায়নকারী সংস্থা ইক্রা জানাচ্ছে, এই আর্থিক বছরে ব্যাঙ্কের ঋণ বৃদ্ধির হার মাত্র সাড়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশ হবে। গত আর্থিক বছরের যা ১৩ শতাংশ ছিল। সব মিলিয়ে অভূতপূর্ব চাপের মুখে দেশের ব্যাঙ্কিং সেক্টর।

Comments are closed.