করোনা মোকাবিলায় দৈনিক ১ লক্ষ বিশ্বমানের পিপিই তৈরি করছে রিলায়েন্স, দাম ৬৫০ টাকা

করোনা মোকাবিলায় এগিয়ে এল মুকেশ আম্বানীর রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ভারতে স্বল্প দামে উচ্চমানের পিপিই তৈরির কাজে গুজরাতের সিলভাসায় অলোক ইন্ডাস্ট্রিজের গোটা পরিকাঠামোই কাজে লাগাচ্ছে মুকেশ আম্বানীর সংস্থা৷ আধুনিক পরিকাঠামো এবং প্রায় ১০ হাজার কর্মীর সাহায্যে দৈনিক এক লক্ষ পিপিই তৈরি করছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ।

করোনা সংক্রমণ যখন ভারতে প্রথম ছড়িয়ে পড়ে তখন বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়েছিল পিপিই। তাই দেশের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই পিপিই তৈরির এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তাঁরা, জানান রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের এক আধিকারিক। দেশের চাহিদা মিটিয়ে তবেই বিদেশে রফতানির কথা ভাবা হবে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।

সিলভাসার এই প্ল্যান্টটিতে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পিপিই-র উৎপাদন শুরু হয়৷ দ্রুততার সঙ্গে উৎপাদন বাড়াতে পরিকাঠামো আরও শক্তিশালী করা হয়৷ এখন দিনে এক লক্ষ করে পিপিই তৈরি হচ্ছে গুজরাতের প্ল্যান্টে৷ যা ভারতে মোট উৎপাদিত পিপিই-র একটি বড় অংশ৷

দেশে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর পর মূলত বিদেশ থেকে পিপিই আমদানি করছে ভারত৷ যার ফলে বেশি চড়া দাম গুনতে হয় পিপিই কিটের জন্য৷ একটি পিপিই আমদানি করতে ভারতের যেখানে ২ হাজার টাকা করে খরচ হয়, সেখানে রিলায়েন্স-এর তৈরি পিপিই-র দাম পড়ছে মাত্র ৬৫০ টাকা৷ অর্থাৎ, চিনের চেয়ে এক তৃতীয়াংশ দামে উচ্চ গুণমানের পিপিই-র জোগান দিচ্ছে মুকেশ আম্বানীর সংস্থা। এখন দেশে উৎপাদিত পিপিই-এর বড় অংশ তৈরি করছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ। ভারতে রিলায়েন্স ছাড়া পিপিই কিট তৈরি করে জেসিটি ফাগোয়ারা, গোকাল দাস এক্সপোর্টস ও আদিত্য বিড়লা গ্রুপ ইত্যাদি।

সংস্থার দাবি, তাদের তৈরি পিপিই-গুলিতে একটিই চেন৷ যার ফলে পিপিই-র নিরাপত্তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠবে না। সেলাইয়ের জায়গাগুলিতে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল টেপ ব্যবহার করা হয়েছে৷ উচ্চ গুণমানের পলিপ্রোপিলিন ব্যবহার করায় পিপিই-গুলি অনেক স্বচ্ছ এবং হাল্কা৷ পিপিই কিটে থাকছে গোটা শরীর ঢাকার বর্ম, গ্লাভস, জুতোর কভার, থ্রি প্লাই কিংবা এন ৯৫ মাস্ক, মাথা ঢাকার সরঞ্জাম এবং ফেস শিল্ড৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর মতে, সুরক্ষা বর্ম বলতে সেই পোশাককেই বোঝানো হয় যা স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এলেও নিরাপদে রাখবে৷ এই সুরক্ষা বর্মের সঙ্গে গ্লাভস, মাস্ক এবং গাউন থাকে৷ আর যদি রক্ত বা হাওয়ায় জীবাণু ছড়িয়ে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে, সেক্ষেত্রে সুরক্ষা বর্মর মধ্যে ফেস প্রোটেকশন, রোদ চশমা, মাস্ক, ফেসশিল্ড, গ্লাভস, গাউন, হেড কভার এবং রবার বুট রাখা হবে। হু-এর গাইডলাইন মেনেই পিপিই কিট তৈরিতে হাত লাগিয়েছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ।

 

Comments are closed.