হাসপাতালে সৌরভ, দাদাকে দেখে গেলেন দিদি, স্টেন্ট বসানোর পর স্থিতিশীল মহারাজ

ত্রাতা টাইমিং। সেই টাইমিংয়ের দৌলতেই আপাতত বিপদ কেটেছে সৌরভ গাঙ্গুলির। ক্রিকেট মাঠে সৌরভকে অফ সাইডের ভগবান বলা হতো। কারণ অসাধারণ টাইমিং। শনিবার সকালে যখন বুকে ব্যথা অনুভব করেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট, নিজেই ফোন করেন উডল্যান্ডস হাসপাতালে। দ্রুত তাঁকে চলে আসতে বলা হয়। গোল্ডেন আওয়ার বা অসুস্থতার গুরুত্বপূর্ণ সময়ের মধ্যেই হাসপাতালে পৌঁছে যাওয়ায় তাঁর চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হয়নি। জানা গিয়েছে স্টেন্ট বসানোর পর আপাতত সৌরভ গাঙ্গুলি স্থিতিশীল আছেন। আগামী ৪-৫ দিন তাঁকে উডল্যান্ডসেই থাকতে হবে।

ঘটনার সূত্রপাত শনিবার সকালে। জানা গিয়েছে, সকালে জিম করার সময় আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন সৌরভ। ব্ল্যাক আউট হয়ে যান মহারাজ। দ্রুত তাঁকে উডল্যান্ডস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে স্ত্রী ডোনা ও দাদা স্নেহাশিসের সঙ্গেই ছিলেন সৌরভের ডাক্তার সপ্তর্ষি বসু। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সৌরভ ভালো আছেন। তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল। সৌরভের চিকিৎসার জন্য ৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড তৈরি হয়েছে। বোর্ডের সদস্য ডাক্তার আফতাব খান জানিয়েছেন, সৌরভ গাঙ্গুলি মৃদু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু দাদার টাইমিংয়ের জেরে বিপদ এড়ানো গেছে।

ডাক্তার আফতাব খান জানিয়েছেন সৌরভের শরীরে ৩ টি ব্লকেজ পাওয়া গেছে। একটি স্টেন্ট বসানো হয়েছে। আপাতত উদ্বেগের কিছু নেই। আরও দুটি স্টেন্ট বসানো নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। স্টেন্ট বসানোর পর কন্যা সানার সঙ্গে কথা বলেছেন সৌরভ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বেডে দেওয়ার পর চা-বিস্কুট খেয়েছেন সৌরভ। আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে সৌরভ গাঙ্গুলি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবেন।

চিকিৎসক মহল বলছে, সৌরভের পরিবারে ইস্কিমিয়া আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস আছে। ইস্কিমিয়াতে ধমনীর মাধ্যমে হৃদপিণ্ডে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে মানুষ অল্পেতেই হাফিয়ে ওঠে। কম পরিশ্রমের কাজ করেও মানুষ ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সৌরভের সেটাই হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। সৌরভকে যখন হাসপাতালে আনা হয় তখন তাঁর নাড়ির গতি ছিল ৭০ প্রতি মিনিট। রক্তচাপ ১৩০/৮০। গাঙ্গুলি পরিবার সূত্রে খবর, এর আগে কখনও এরকম সমস্যা হয়নি সৌরভের। শুক্রবার রাতেই প্রথম অস্বস্তি অনুভব করেন সৌরভ। শনিবার সকালে জিম করতে গিয়েই বিপত্তি।

এদিকে মহারাজ হাসপাতালে ভর্তি এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উডল্যান্ডস চত্বরে ভিড় জমে যায়। বিকেলে স্ত্রীকে নিয়ে সৌরভকে দেখে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই উডল্যান্ডসে ঢোকে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়। সৌরভকে দেখে বেরিয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রী জানান চিন্তার কারণ নেই। সৌরভ ভালো আছে। তারপর মমতা বলেন, সৌরভ বাচ্চা ছেলে ওর কী করে এসব হয়! সৌরভ কোনোদিন টেস্ট করাননি জেনে অবাক মুখ্যমন্ত্রী।

এদিন হাসপাতালে এসে সৌরভকে দেখে যান ফিরহাদ হাকিম, লক্ষ্মীরতন শুক্লা, সুজন চক্রবর্তী, অরূপ বিশ্বাস, বৈশালী ডালমিয়া প্রমুখ। অমিত শাহ সৌরভের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিয়েছেন। দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার বার্তা এসেছে একদা সতীর্থ সচিন, কুম্বলে, সহবাগের কাছ থেকে। কোহলি, রাহানেরাও সৌরভের অসুস্থতার খবর শুনে উদ্বেগ প্রকাশ করে ট্যুইট করেছেন।

Comments are closed.