রোগের সঙ্গে লড়তে হবে, রোগীর সঙ্গে নয়, ফোন করলেই মহিলা কণ্ঠের সচেতনতা বাণী, কে এই নেপথ্য শিল্পী?

এ দেশে করোনাভাইরাস অতিমারির আকার নেওয়ার সময় থেকে সরকার জনসচেতনতা মূলক প্রচার শুরু করেছিল। যার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য, ফোনের কলার টিউনে সতর্কবাণী- ‘করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯- এর বিরুদ্ধে আজ পুরো দেশ লড়ছে। কিন্তু মনে রাখবেন, আমাদের রোগের সঙ্গে লড়তে হবে, রোগীর সাথে নয়…।’ ফোনে কারও নম্বর ডায়াল করলেই শোনা যায় সেই মহিলা কণ্ঠ। ফোন করতে গিয়ে বারবার একই সচেতনতামূলক প্রচার শুনে অনেকেই মজা করে বলেন, কীসের জন্য ফোন করছি, সেটাই ভুলে যাই।

ফোনের মাধ্যমে সচেতন করা এই মহিলা কণ্ঠটি কার তা জানার পর কয়েকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়া তাঁকে নিয়ে মজেছে। না, তিনি কোনও পরিচিত ‘সেলেব’ নন। এই ভয়েসওভার আর্টিস্টের নাম জসলিন ভাল্লা। ভয়েস ওভারের নেপথ্যে থাকা প্রাক্তন ক্রীড়া সাংবাদিকের নাম প্রকাশ্যে আসার পর তিনি রাতারাতি সেলেব্রিটি হয়ে উঠেছেন। নেট দুনিয়ায় কৌতূহল কে এই জসলিন ভাল্লা?

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের খালসা কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক হন জসলিন। তারপর পেশা হিসেবে বেছে নেন ক্রীড়া সাংবাদিকতাকে। তবে গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ভিও আর্টিস্ট বা ভয়েস ওভার আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। বহু বাণিজ্যিক পণ্যের বিজ্ঞাপনে কণ্ঠ দান করেছেন জসলিন। ইংরেজি, হিন্দি ও পাঞ্জাবি ভাষায় তাঁর দখল অসাধারণ। কণ্ঠস্বর পরিচিত ও বিখ্যাত হলেও অন্যান্য ভয়েস ওভার আর্টিস্ট যেমন প্রচারের অন্তরালে থেকে যান, জসলিন ভাল্লার ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। তবে করোনা নিয়ে তাঁর ভয়েস ওভার রাতারাতি জসলিনকে প্রচারের আলোয় নিয়ে এসেছে।

যখন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে এক প্রোডিউসার তাঁর সচেতনতা বার্তা রেকর্ড করেন, চল্লিশ বছর বয়সী জসলিন নাকি জানতেনই না তাঁর এই ভয়েস ওভার কোথায় ব্যবহার হতে চলেছে। পরে তিনি জানতে পারেন তাঁর ভয়েসওভার ব্যবহার করা হচ্ছে ফোনের কলারটিউনে। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, ফোন করতে গিয়ে যখন নিজের কণ্ঠস্বর শোনেন, বেশ অদ্ভুত লাগে। জসলিনের কথায়, আমার মনে হয়, আমি নিজেই নিজেকে সচেতন করছি। প্রথম প্রথম জসলিনের স্বামীও কিছুটা চমকে গিয়েছিলেন ৩০ সেকেন্ডের কলারটিউনে স্ত্রীয়ের কণ্ঠস্বর শুনে।

করোনা যুদ্ধে আজ দেশবাসীকে সচেতন করার নেপথ্যে বড় ভূমিকা জসলিনের। প্রচারের আড়ালে থাকা তিনিও এক করোনাযোদ্ধা। এই ভয়েস ওভার রেকর্ডের আগে বিভিন্ন বাণিজ্যিক পণ্যের বিজ্ঞাপনে তো বটেই, দিল্লি মেট্রো, ভারতীয় রেলওয়ের হয়েও ভয়েস রেকর্ড করেছেন জসলিন ভাল্লা। তবে করোনা নিয়ে সচেতনতামূলক বার্তাই আজ তাঁকে প্রচারের আড়াল থেকে সেলেবের মর্যাদা দিয়েছে।

Comments are closed.