৩৬ বছর জেলে থাকার পর খুনের মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তকে বেকসুর খালাস সুপ্রিম কোর্টের

৩৬ বছর আগে এক খুনের মামলায় অন্যায় ভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়া বাংলার এক বক্তিকে বেকসুর খালাস দিল সুপ্রিম কোর্ট।
১৯৮৪ সালে একটি খুনের মামলায় অভিযুক্ত হয় জনৈক মহম্মদ ইউনুস আলি তরফদার। নিম্ন আদালত থেকে কলকাতা হাইকোর্ট তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। যদিও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও ও বিচারপতি দীপক গুপ্তার ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যে সব অবস্থাগত প্রমাণ ও নথি পাওয়া গিয়েছে, সেগুলি বেশ দুর্বল। এতে সংশ্লিষ্ট খুনের মামলায় অভিযুক্তের জড়িত থাকা প্রমাণ হচ্ছে না। এই প্রেক্ষিতে ৩৬ বছর পর ইউনুসকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
১৯৮৪ সালের ২০ মার্চ রাজারহাট থানায় একটি ফোন যায়। সেই ফোনে একটি জঙ্গলের পাশে জলায় একটি মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর পায় পুলিশ। কিন্তু রাতের অন্ধকারে তখনই সেই দেহ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এফআইআর দায়ের করা হয় এবং পরের দিন সেই ভেসে থাকা দেহটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতদেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। শ্বাসরোধ করে মারা যাওয়ার কথা উঠে আসে ময়নাতদন্তে। মৃতের শরীরের অধিকাংশ অংশই পচে গিয়েছিল। এই ঘটনার চারদিন পর, ২৫ মার্চ রাজারহাট থানাতে বেচারাম ধাঁড়া নামে এক ব্যক্তির নিঁখোজের রিপোর্ট দায়ের হয়। এই ঘটনার তদন্তে নেমে মহম্মদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি দামী হাতঘড়ি, যা মৃত বেচারাম ধাড়ার ভাইয়ের বলে জানা যায়। সেই ভাই আদালতে জানান, ১৯৮৪ সালের ১৫ মার্চ থেকে বেচারাম নিঁখোজ, সেদিন তাঁর হাতে এই ঘড়িটাই ছিল।
এই মামলার তদন্তে খুনের অভিযোগ দায়ের হয় মহম্মদ ইউনুস আলি-সহ আরও তিনজনের বিরুদ্ধে। মৃতের পরিবারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিল। যদিও নিম্ন আদালত বাকিদের বিরুদ্ধে খুনের প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস করে দেয়। মহম্মদ ইউনুস আলিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে ইউনুস। ৩৬ বছর পর এই মামলার রায়ে শীর্ষ আদালত জানায়, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণই হচ্ছে না। শুধুমাত্র কিছু যোগসূত্র ধরে মামলার তদন্ত হয়েছে। এরপরেই অভিযুক্তকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

Comments are closed.