সন্তোষ ট্রফি পাল্টে দিতে পারে জীবন, দারিদ্রকে সঙ্গী করেই স্বপ্ন দেখছেন বেলঘড়িয়ার সুরজিৎ

বেলঘড়িয়া রথতলার বাড়িটার নিত্যসঙ্গী দারিদ্র। তবু এই বাড়ি থেকেই বড় ফুটবলার পর স্বপ্ন দেখছেন সুরজিৎ শীল। বাবা অন্যের গাড়ি চালান। সুরজিতের দাদা ফ্লিপকার্ট ডেলিভারি বয়। বছর চব্বিশের সুরজিৎ জানেন সংসার টানতে বেশ কষ্ট হয় বাবা এবং দাদার। তিনি চেয়েছিলেন ফুটবলটা ছেড়ে দিয়ে কোনও কাজ করতে। অন্তত সংসারের কিছুটা সুরাহা হবে। কিন্তু ভাইয়ের স্বপ্ন ভেঙে যাক চাননি তাঁর দাদা বিশ্বজিৎ শীল। নিজে হাজার কষ্ট করতে রাজি। তবু তিনি চান, তাঁর ভাই ফুটবলটা খেলে যাক। তাই রোদ, বৃষ্টি, ঝড় উপেক্ষা করেই বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেন ফ্লিপকার্ট এর প্যাকেট। সারাদিনের পরিশ্রমের পর বিশ্বজিৎ একটাই স্বপ্ন দেখেন, তাঁর ভাই একদিন বড় দলে খেলবেন।

কিন্তু আপনি কি চেনেন, কে এই সুরজিৎ শীল?
সুরজিৎ এই বছর বাংলাকে সন্তোষ ট্রফির যোগ্যতা অর্জন পর্ব থেকে মূল পর্বে তোলার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিয়েছে। মূলত স্টপার সুরজিৎ দলের প্রয়োজনে উঠে গিয়ে গোলও করতে পারেন। কলকাতা লিগে কালিঘাট এম এস-এর হয়ে খেলেছেন তিনি। সন্তোষ ট্রফি এবং কলকাতা লিগ মিলিয়ে পরপর তিনদিন ২৭০ মিনিট ফুটবল খেলেছেন। তবে বাংলাকে মূলপর্বে তুলেই থেমে যেতে চাইছেন না তিনি। আইএফএ থেকে উপহার হিসেবে যে অর্থ পেয়েছেন, তা দিয়ে কিনেছেন নতুন বুট। আর সেই নতুন বুট পরেই সন্তোষ ট্রফি মূলপর্বে নজর কাড়ার লক্ষ্যে সুরজিৎ। কলকাতা লিগের পর এমনিতেই তাঁর হাতে কোন দল নেই। দাদার থেকে টাকা নিয়ে জিম চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত। আর সঙ্গে করছেন অনুশীলন। এই মাসের শেষে বা পরের মাসের শুরুতে সন্তোষ ট্রফি মূল পর্বের জন্য অনুশীলন শুরু করবে বাংলা। তার আগে নিজেকে ফিট রাখছেন বেলঘড়িয়ার এই ফুটবলার।
সুরজিৎ বলছেন, ‘দাদা আমাকে সব সময় বলে চাকরির কথা ভাবার দরকার নেই। আমি তাই শুধু ফুটবল নিয়েই ভাবি। বিশ্বাস করি এই সন্তোষ ট্রফিতে ভালো খেলতে পারলে, পরের বছর ভালো অফার পাব। আমার জীবনটা বদলে যাবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই কঠোর অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছি।’

 

Comments are closed.