সুশান্ত ঘোষের ডায়েরি #১: ‘বন্ধুর চেয়ে পার্টি বড়,’ এ কথা আজ বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব?

আমাকে যাঁরা ব্যক্তিগতভাবে চেনেন, জানেন, ভালোবাসেন বা ভালোবাসেন না, পছন্দ করেন বা করেন না, সকলের কাছেই আমার জীবনের অভিজ্ঞতা লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করার আত্মিক তাগিদ থেকেই এই উদ্যোগ। তবে এই প্রথম যে লেখার চর্চায় প্রবেশ করছি তা নয়। ২০০৪, ২০০৫ ও ২০০৬ সালেও পর পর তিন বছর আমার লেখা তিনটি বই প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক ঘূর্ণাবর্তে সেই প্রয়াসের ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়নি। এর মধ্যেই ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটে।
এই পালাবদলের পর ২০১১ সালের মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আজ পর্যন্ত আমি জেলার (পশ্চিম মেদিনীপুর) বাইরে। নিজের পরিবার, পরিজন থেকে দূরে, নিজের এলাকা এমনকী জেলারও বাইরে। এর মূল কারণ, আমার বিরুদ্ধে মামলা এবং আদালতের নিষেধাজ্ঞা। ২০১১ সালে পালাবদলের পর আমার মতন অনেক বামপন্থী কর্মী-সমর্থক এলাকাছাড়া হয়েছেন, লাঞ্ছিত-নির্যাতিত হয়েছেন। ছ’মাস, এক বছর পর তাঁরা আবার নিজের এলাকায় ফিরতে পেরেছেন। কিন্তু আমার আর ফেরা হয়নি। আমার জেলার বাইরে থাকার মেয়াদের প্রায় সাত বছর অতিক্রান্ত। যখন আমি এলাকা ছাড়তে বাধ্য হই তখন আমি সিপিএমে ছিলাম, আজও দলেই আছি। তখন বিধায়ক ছিলাম, এখন আর তা নেই, এটাই একমাত্র বদল!

যদিও সিপিএমে আমার থাকা, না থাকা নিয়ে বিভিন্ন দিক থেকে নানা চর্চা  শুরু হয়েছে। কিছু আমার কানেও এসেছে। কিন্তু আমিও নিজের মত ইতিমধ্যেই ব্যক্ত করেছি, যেদিন রাজনীতিতে এসেছিলাম সেদিন নেতারা শিখিয়েছিলেন, ‘আদর্শের জন্য সব কিছু ত্যাগ করা যায়, কিন্তু কোনও কিছুর জন্যই আদর্শ ত্যাগ করা যায় না’। যা প্রথম দিন শিখেছিলাম, গ্রহণ করেছিলাম তাতেই আমি আজও দৃঢ়। যদিও আমাকে নানাভাবে ফাঁসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যাঁরা আমাকে ভালোবাসেন তাঁদের বিভ্রান্ত করার প্রয়াস হয়েছে। কে বা কারা তা করেছেন, তা আমি বলতে পারব না। বিরুদ্ধ-পক্ষ মানসিকভাবে আমাকে দুর্বল করার জন্য একাজ করে থাকতে পারে। আবার আমি যে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তার অভ্যন্তরেই যাঁরা আমায় পছন্দ করেন না, তাঁরাও এই প্রয়াসে যুক্ত থাকতে পারেন। কিন্তু সকলের উদ্দেশ্যেই আমার বক্তব্য, ‘আমি যখন প্রথম কলম ধরেছিলাম,তাতে তৃণমূল সম্পর্কে আমার যে গভীর উপলব্ধি, তা ২০০৪ সালে আমার লেখা ‘সন্ত্রাশের আড়াই বছর’ বইতেই দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করেছি। তাই এই দলে আমার যোগদানের কোনও প্রশ্ন নেই’।
আর একটি সর্বভারতীয় দল বিজেপি, যারা বর্তমানে দিল্লির ক্ষমতায় আসীন, খুব সুপরিকল্পিতভাবে পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের পায়ের তলার মাটিকে মজবুত করার জন্য আমাকে নিয়ে নানা রটনায় ব্যস্ত। তাদেরও জানা উচিত, ২০০৫ সালে আমার লেখা বই ‘অন্ধকার সময়, আলোর সন্ধান’-এ তাদের নিয়ে আমার মূল্যায়ন গভীরভাবেই বিশ্লেষণ করা আছে। তাই এই দলে যোগদানের কোনও প্রশ্ন অন্তত আমার ক্ষেত্রে থাকা উচিত নয়। এই লেখার ভূমিকার মাধ্যমেই আমার অবস্থান পরিষ্কার করতে চাইছি, ‘আমি সেদিন যেখানে ছিলাম, আজও সেখানেই আছি।’

সংগঠনের একজন কর্মী হয়ে ২০১১ সালে কারাবাসে চলে যাওয়ার পরে, ২০১২ সালে ভারতবর্ষের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিনে মুক্তি পাই। দীর্ঘ ১৮১ দিনের জেল জীবনের পর, ২০১২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি (দিনটি আজও মনে আছে,মঙ্গলবার ) আলিপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার দিনটি, আমার জীবনের স্মরণীয় দিনগুলির অন্যতম। কেন বললাম স্মরণীয় দিন? এই বলাটা বোধ হয় একজন বামপন্থীর কাছে অতি উক্তি নয়। এই লেখার পরবর্তী কোনও পর্যায়ে এই বিষয়ে সবিস্তারে উল্লেখ করব। কিন্তু আজ ভূমিকাতে ওই বিশেষ দিনটির উল্লেখ করতে চাই এ জন্যই যে, সেদিন আলিপুর জেলের বাইরে সকাল থেকে বহু মানুষ, বিশেষ করে ছাত্র-যুবদের উপস্থিতি এবং তাঁদের উচ্ছ্বাস আমি জেলের অভ্যন্তরে বসেই উপলব্ধি করতে পারছিলাম। বাইরের উচ্ছ্বাসের সেই ঢেউ পাড়ি দিচ্ছিল জেলখানার ভিতরেও। জেলের মধ্যে থাকা অন্য বন্দিরাও সেদিন আবার নতুন করে বামপন্থার গুরুত্ব, ভূমিকাকে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তাঁদের চোখে আমার জন্য ভালোবাসার টান সেদিন কিছুটা হলেও অনুধাবন করতে পেরেছিলাম। জেল থেকে আমার বেরিয়ে আসার সময় জেলের ভিতরের প্রায় নব্বই শতাংশ মানুষই দাঁড়িয়ে ছিলেন হয় রাস্তার পাশে নয়তো জেল গেটের সামনে। সবার চোখে দেখেছিলাম ভালোবাসা। বারবার মনে পড়ছিল ২০১১ সালের ২১ অগাস্ট, যেদিন আমি আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে প্রবেশ করি, সেই দিনের কথা। জেলের অন্য বন্দিরা সেদিন আমায় ভালো মতো গ্রহণ করেননি। কিন্তু পরে ধীরে ধীরে উপলব্ধি করতে পেরেছেন। সত্যি কথা জানতে পেরে অনেকে বুকে জড়িয়েও ধরেছেন। তাই যেদিন জেল থেকে বেরোই মনে হচ্ছিল তাঁদের আপনজন হয়েই জেল থেকে বেরিয়ে আসছি। মানুষ কত দ্রুত বদলে যায়। ২০১২ র ৭ ফেব্রুয়ারি বেলা দু’টো নাগাদ যখন জেল থেকে বেরিয়ে বাইরে এলাম, বাইরের সেই বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস, হাজার-হাজার মানুষের উন্মাদনার বহিঃপ্রকাশ ধরা পড়েছিল সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরাতেও।

যদিও আমি জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার আগের দিন, অর্থাৎ ২০১২ সালের, ৬ ফেব্রুয়ারি পার্টির পত্রিকায় পড়েছিলাম, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে (প্রশ্ন ছিল-‘আগামীকাল সুশান্ত ঘোষ জেল থেকে বেরোবেন, দলের তরফে কি কোনও কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে?’) পার্টির একজন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জানিয়েছিলেন, ‘কোনও দলীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি’। তারপরও এত মানুষের উপস্থিতি এবং আমাকে ঘিরে উচ্ছ্বাস, আমাকে যেমন একদিকে উৎসাহিত, অনুপ্রাণিত করেছিল। তেমনি ব্যক্তি জীবনের নানা অভিজ্ঞতা, উপলব্ধি থেকে আশঙ্কিতও হয়েছিলাম, এই উন্মাদনা ও উচ্ছ্বাস (আমি দলে কোনও উচ্চ পদাধিকারী না হওয়া সত্ত্বেও) আমাকে কোনও নতুন, ভয়ঙ্কর সমস্যার সামনে দাঁড় করাবে না তো! পরবর্তী পর্যায়গুলিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব অন্যান্য অভিজ্ঞতার মতোই।

২০১২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৬ র মার্চ মাসের শেষ পর্যন্ত আমার ঠিকানা হয় এমএলএ হস্টেলের রুম নং ৫/১। সেখান থেকেই এলাকার মানুষ, পার্টির সঙ্গে যোগসূত্র রক্ষা ও বিধায়ক হিসাবে কাজকর্ম চলতে থাকে আমার। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে যেদিন বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হয়, তারপরই বিধায়ক আবাস ছেড়ে বর্তমান ঠিকানায় চলে আসি আমি। যদিও জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর আইনানুগ কারণে নিজের জেলায় প্রবেশাধিকার না থাকলেও, রাজ্যের বেশির ভাগ জেলাতেই ২০১২, ২০১৩ এবং ২০১৪, এই তিন বছর গণসংঠন ও পার্টির প্রকাশ্য কর্মসূচিতে যোগদান করেছি। সেখানেও মানুষের ভালোবাসা উপলব্ধি করতে পেরেছি। তখন মনে হয়েছে, বিরোধীরা কুৎসা, অপপ্রচার, সমালোচনা যতই করুক, মানুষ আমাকে ভুল বোঝেননি। যা করেছি সব রাজনীতি ও সংগঠনের জন্য। ব্যক্তির জন্য বা ব্যক্তির ইচ্ছায় নয়। তাই বিরোধীদের সমালোচনা নিয়ে আমাদের রাজনীতিতে চিরায়ত বক্তব্য, ‘তুমি যদি বামপন্থী হও, তোমার শত্রুরা-বামপন্থার শত্রুরা যদি তোমায় কঠিন সমালোচনায় বিদ্ধ করে, তাহলে বুঝবে তুমি সঠিক পথে চলেছ। আর বিরোধীরা যদি প্রশংসা করে বুঝবে পদস্খলন হয়েছে,’ এই চিরায়ত বক্তব্যের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে মূল্যায়ন করেছি। এতে নিজের উদ্যোম ও মানসিকতার বিকাশ হয়েছে।
২০১৫ সালের প্রথম দিকে, আদালতের বিশেষ অনুমতিতে আমি পার্টির জেলা (পশ্চিম মেদিনীপুর) সম্মেলনে থাকার সুযোগ পেলাম। পরবর্তীতে রাজ্য সম্মেলন ও পার্টি কংগ্রেসেও অংশ নিলাম। কিন্তু পরে জেলা ও রাজ্য সংগঠনে রদবদলের পর দেখলাম, জেলায় যাওয়ার সুযোগ তো নেইই, অন্যত্র পার্টি কর্মসূচিতে যাওয়াও সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেল। কোনও এক অদৃশ্য কারণে সংগঠনে তখন থেকে এখনও পর্যন্ত আমি ব্রাত্য। কেবলমাত্র কলকাতায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচি, মিছিল-সভা এগুলোতেই কর্মী হিসাবে উপস্থিত হই। কিন্তু সেখানে গিয়েও অজস্র কর্মীর প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে আমি অসহায় হয়ে যাই। যখন তাঁরা বলেন, ‘কমরেড সংকটের এই মুহূর্তে কেন আমরা আপনাকে পাই না’? বিষয়টি হালকা করতে বলি, ‘এই তো কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে এসেছি, আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়’। পাল্টা প্রশ্ন আসে, ‘অতীতের ভূমিকায় কেন আপনাকে পাই না’? তাঁরা বলেন, ‘এলাকায় দলীয় কর্মসূচির জন্য আপনার নাম সুপারিশ করি, কিন্তু বর্তমান রাজ্য নেতৃত্ব চুপ করে থাকেন, কোনও সদর্থক উত্তর আমরা পাই না’। আমিও দলীয় শৃঙ্খল মানা কর্মী হিসেবেই তাঁদের সরাসরি উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যাই। যদি সঠিক উত্তর দিই, সেটা সংগঠনের পক্ষে সুখকর হবে না। তাই আমায় এ সকল প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে হয়। কখনও শারীরিক, কখনও পারিবারিক কিংবা আইনি সমস্যার যুক্তি দেখিয়ে বেরিয়ে আসি। নিজের কাছে প্রশ্ন করে নিজেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি, ‘এ রকমটা কি কাম্য ছিল’?
যে কথা রাজনীতির শুরুতে শিখেছিলাম, ‘বন্ধুর চেয়ে পার্টি বড়’। এখন কি বুকে হাতে দিয়ে আমি বা আমরা যাঁরা নানাভাবে পার্টিতে আক্রান্ত, তাঁরা একথা বলতে পারব! পুরনো মামলায় জর্জরিত, নতুন মামলার বোঝা, আর্থিক সংকট, পারিবারিক সমস্যা, কোনও কিছুই আজ আর সংগঠনের মনে দাগ কাটে না। সবই যেন ব্যক্তিগত বিষয়। এ নিয়ে সঠিক জায়গায় বলার চেষ্টা কম করিনি। কিন্তু নিট ফল ‘শূন্য’। এখন বোধ করি, আমার আর খোঁজ নেওয়ারও প্রয়োজন নেই। এক বুক যন্ত্রণা নিয়েই মনে হয়, এর থেকে জেল জীবন ভালো ছিল। অনিশ্চয়তার মাঝেও সেখানে এক ধরনের নিশ্চয়তা ছিল। এখন আমার দশা কার্যত গৃহবন্দীর মতো।
এই বছরের (২০১৮) মার্চ মাসেও রাজ্য সম্মেলনে যে ঘটনা ঘটল, তাতে মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হলাম। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর দু’জন সদস্যের সঙ্গে এ প্রসঙ্গে কথা বলি। পরে তাঁদের মধ্যে এক সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, বর্তমানে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য একদিন আমার বর্তমান ঠিকানায় এলেন। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন গুরু-গম্ভীর বিষয়ে সেদিন আলোচনা হয় আমাদের। যাওয়ার সময় ওই নেতা অনেক ভালো ভালো কথা বলে গেলেন আমাকে। তারপর সব ভুলে গেলেন। এই তিন মাসে তাঁর একটি শব্দও কানে এলো না।
এর মধ্যেই একদিন হঠাৎ একটি ঘটনা ঘটল। কলকাতা বিমানবন্দরের একজন অস্থায়ী কর্মচারী, দমদম এলাকায় তাঁর বাড়ি। হঠাৎ করেই তাঁর সঙ্গে দেখা বিমানবন্দরে। আমার হাত চেপে বললেন, ‘দাদা আমায় চিনতে পারছেন না! আমি শম্ভু। গতকালই আপনাকে নিয়ে কথা বলছিলাম। আজ আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল’। বললেন, ‘অনেকে পার্টি ছেড়ে গেলেও এই শম্ভু আজও পার্টি সদস্য আছে। দাদা আপনি কিছু করুন।’ পার্টিটা চোখের সামনে শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে এক নিশ্বাসে দিল্লি থেকে রাজ্য পর্যন্ত কিছু পার্টি নেতার নাম উচ্চারণ করে গেলেন। শেষে বললেন, ‘দাদা মরে গেলেও পার্টি ছেড়ে যাব না। আপনি শুধু আমাদের পাশে দাঁড়ান’। বুক ভরা আশা নিয়ে তাঁর যে প্রত্যয়ী বক্তব্য, সোজা উত্তর দিতে গিয়ে নিজেই আড়ষ্ট হয়ে গেলাম। ভেবে অবাক হলাম, আজও পার্টিকে ভালোবেসে একদল মানুষ দলকে ঘুরে দাঁড় করাতে চাইছে! মনের মধ্যে যে সিদ্ধান্ত ঘুরপাক খাচ্ছিল, ভাবলাম কলম ধরা ছাড়া এই মুহূর্তে আর আমার পক্ষে বিশেষ কিছু করা সম্ভব না। ভেবে অবাক হলাম, যখন পশ্চিমবঙ্গে প্রতি মুহূর্তে সিপিএম ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে, নির্বাচনের মাপকাঠিতে আমরা প্রতিদিন কোণঠাসা হচ্ছি, যখন এই কোণঠাসা অবস্থায় আমাদের বক্তব্য কী হবে সেই ভাষাও খুঁজে পাচ্ছি না (সর্বশেষ মহেশতলার উপ-নির্বাচনের পর পার্টির তরফে কোনও সদর্থক বক্তব্য প্রকাশিত না হওয়া), এটাই বোধ হয় সঠিক সময় কলম ধরার।
আমার এই লেখা ব্যক্তিগতভাবে কাউকে আঘাত দেওয়ার জন্য নয়। বা কারোওর থমকে যাওয়া বিবেককে জাগিয়ে তোলার জন্যও নয়। অথবা দলের এই সংকটাপন্ন অবস্থায় পার্টিকে আরও সংকটের দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্যও নয়। যাবতীয় সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে, বামপন্থী আদর্শ মেনে বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণ, স্তাবকতা ভেদ করে সঠিক আপনজনকে চিহ্নিত করে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যেই এই লেখা। মানুষের প্রত্যাশা পূরণে আমরা আবার একদিন মাথা তুলে আবার দাঁড়াতে পারব, এই আশা রাখি।
 

(চলবে)

Comments are closed.