৬৫ বছরের ওপর বয়সীদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট অসাংবিধানিক, নির্বাচন কমিশনকে চিঠি তৃণমূলের

৬৫ বছরের বয়সের ঊর্ধ্বে ভোটারদের কেবল পোস্টাল ব্যালটে ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিধিবহির্ভূত, অসাংধানিক এবং নাগরিক অধিকারের পরিপন্থী। কেন্দ্রের ১৯৬১ সালের ভোট গ্রহণের নিয়মে সংশোধনের প্রেক্ষিতে এমন ভাষাতেই নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিল তৃণমূল। রাখা হল আইন প্রত্যাহারের আবেদন।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে প্রবীণ ব্যক্তিদের ভোটদানের ক্ষেত্রে নয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। জানানো হয়েছে, করোনার জেরে ৬৫ বছর বয়সের উপরর ভোটাররা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। একই সুবিধা পাবেন করোনা সংক্রমিত এবং করোনা সংক্রমিত সন্দেহে বাড়িতে বা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তি। কিন্তু হাসপাতালে ভরতি থাকা করোনা সংক্রমিতরা সেই সুবিধা পাবেন না।

১৯৬১ সালের ভোট গ্রহণের নিয়মে সংশোধন করে গত বৃহস্পতিবার এই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিল মমতা ব্যানার্জির দল। সোমবার তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সি একটি চিঠিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে লেখেন, বিরোধী দলগুলির সঙ্গে যথাযথ আলোচনা ছাড়াই এই আইন সংশোধন করা হয়েছে। এ আইন সংশোধন নাগরিকের ভোটের গোপনীয়তার অধিকার, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অধিকার এবং নাগরিকের স্বাস্থ্যের অধিকারের পরিপন্থী। তৃণমূলের যুক্তি, ভারতের ৬ শতাংশ মানুষ ৬৫ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে এবং এই আইন সংশোধনের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। এই আইন সংশোধন অতিমারি পরিস্থিতিতে করা হলেও স্থায়ী আইন হিসেবেই মনে করা হচ্ছে। সুব্রত বক্সি লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ দেশের অন্তত ১৩ জন মুখ্যমন্ত্রীর বয়স ৬৫ এর উপর। এই আইন সংশোধন নিশ্চিতভাবে তাঁদের কাছেও অদ্ভুত মনে হবে। এটা হাস্যকরও বটে। কারণ, তাঁরা নির্বাচনের প্রচার করতে পারবেন, ভোটে দাঁড়াতে পারবেন, কিন্তু ভোটাধিকার প্রয়োগের সময় কেবল পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবেন।

তাছাড়া পোস্টাল ব্যালটে ভোটগ্রহণ অস্বচ্ছ হওয়ার আশঙ্কা বেশি বলে মত তৃণমূল সাধারণ সম্পাদকের। তিনি লিখেছেন, দলের এজেন্ট থেকে সরকারি আধিকারিক ইত্যাদি দিয়ে ভোট প্রভাবিত করা হতে পারে। তাছাড়া পোস্টাল ব্যালটে ভোটগ্রহণ হলে বয়স্কদের করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা আরও বেশি থাকবে বলে দাবি সুব্রত বক্সির। তাই অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটপ্রক্রিয়া পরিচালনা ও নাগরিকের অধিকারের স্বার্থে, সংবিধান মেনে কমিশন এই আইন প্রত্যাহার করুক। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে আবেদন তৃণমূলের।

 

 

Comments are closed.