রায়গঞ্জে সেলিম, যাদবপুরে বিকাশ, বর্ধমান-দুর্গাপুরে আভাস, ঝাড়গ্রামে দেবলীনা, দক্ষিণ কলকাতায় নন্দিনী, বোলপুরে রামচন্দ্র ডোম, এসপ্তাহেই সিপিএমের প্রথম তালিকা প্রকাশ

রাজ্যে বিজেপি এবং তৃণমূল বিরোধী ভোট ভাগ হওয়া রুখতে ইতিমধ্যেই কংগ্রেসকে স্পষ্ট আসন সমঝোতার বার্তা দিয়েছে সিপিএম। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নিজেরা ২২ টি এবং শরিকদের জন্য ১০ টি সিট রেখে কংগ্রেসকে ছাড়া হবে ১০ টি আসন। এই আসন সমঝোতার অন্যতম শর্ত, একে অপরের জেতা সিটে প্রার্থী দেবে না সিপিএম এবং কংগ্রেস। যদিও গত ২০১৪ সালে সিপিএমের জেতা রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ আসনে সংশ্লিষ্ট জেলা কংগ্রেস প্রার্থী দিতে চাইছে এবং সেই জটিলতা এখনও না কাটায়, সিপিএম নেতৃত্ব নিজেদের প্রার্থীদের তালিকা একপ্রকার চূড়ান্ত করে ফেলল।
বুধবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বসেছিল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক। সেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার শর্ত এবং প্রার্থী নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিপিএম ঠিক করেছে, কংগ্রেস যদি তাদের দুটি জেতা আসনে প্রার্থী দেয়, সেক্ষত্রে তারাও কংগ্রেসের গতবারের জেতা চারটির মধ্যে দুটি আসনে (সম্ভবত মালদহ উত্তর এবং জঙ্গিপুর) প্রার্থী দেবে। সিপিএমের বক্তব্য, তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ হওয়া রুখতে তারা ইতিবাচক বার্তা কংগ্রেসকে দিয়েছে, কিন্তু কংগ্রেস তা না মানলে তাদেরও পালটা প্রস্তুতি রাখতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে সিপিএম দু’দফায় প্রার্থী ঘোষণার ব্যাপারে ভাবনা-চিন্তা করছে। সিপিএম নেতৃত্ব ঠিক করেছে, কিছু সিট ওপেন রাখা হবে, যেখানে তারা প্রার্থী দেবে, না কংগ্রেস দেবে তা এখনও চূড়ান্ত নয়। এর পাশাপাশি কিছু সিট আছে যেখানে তারাই প্রার্থী দেবে। এই সিটগুলিতে প্রার্থীদের নাম নির্বাচন ঘোষণা হওয়া মাত্রই জানিয়ে দেবে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। আর যে সিটগুলি কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনার জন্য ওপেন থাকছে সেখানে প্রার্থীর নাম আপাতত ঘোষণা না করে একটু অপেক্ষা করা হবে।

কোন সিটে কে প্রার্থী

সূত্রের খবর, কিছু আসনে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে বুধবারের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে। রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদে প্রার্থী থাকছেন মহম্মদ সেলিম এবং বদরুদ্দোজা খান। যাদবপুরে প্রার্থী হচ্ছেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। দক্ষিণ কলকাতায় সব্যসাচী চক্রবর্তী প্রার্থী হতে রাজি না হওয়ায়, এই আসনে সিপিএম প্রার্থী হবেন অধ্যাপিকা নন্দিনী মুখোপাধ্যায়। যদিও সিপিএম ঠিক করেছে কলকাতার একটি আসন কংগ্রেসকে ছাড়া হবে, সেটি সম্ভবত উত্তর কলকাতা। আলোচনায় তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ঝাড়গ্রাম আসনে প্রার্থী দেবলীনা হেমব্রম। বোলপুর কেন্দ্রে প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম। বীরভূম আসনটি কংগ্রেসকে ছাড়ার কথা ভাবা হয়েছে। বর্ধমান দুর্গাপুরের প্রার্থী দলের আর এক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আভাস রায়চৌধুরী। বর্ধমান পূর্বের প্রার্থী ঈশ্বর দাস। আসানসোল কেন্দ্র কংগ্রেসের জন্য ওপেন রাখা হয়েছে। যদি এই আসনে সিপিএম লড়ে তবে প্রার্থী হবেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বাঁকুড়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলী প্রাথমিকভাবে চাইলেও বাঁকুড়া কেন্দ্রে প্রার্থী হচ্ছেন না আর এক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র। তিনি প্রার্থী হতে চান না বলে নিজেই জানিয়েছেন দলীয় নেতৃত্বকে। বাঁকুড়ার সিপিএম প্রার্থী পার্থ মজুমদার এবং সুকুমার পাইনের মধ্যে কেউ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ডহারবার এবং উত্তর ২৪ পরগনার বারাকপুর আসনটি সিপিএম ছাড়তে চায় কংগ্রেসকে। দমদম কেন্দ্রে প্রার্থী রেখা গোস্বামী। বনগাঁ কেন্দ্রের জন্য অলোকেশ দাস কিংবা দেবেশ দাসের নাম ভাবা হয়েছে।
সূত্রের খবর, শুক্রবার, ৮ ই ফেব্রুয়ারি বামফ্রন্টের মিটিংয়ে শরিকদের সঙ্গে প্রার্থী নিয়ে আলোচনা চূড়ান্ত করবে সিপিএম। ৮ বা ৯ তারিখ, যেদিনই ভোট ঘোষণা হবে সেদিনই প্রথম দফায় অন্তত ২০ টি সিটে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে।

Comments are closed.