বিজয় মালিয়ার দেশ ছেড়ে পালানোতে সরাসরি মদত রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর, অভিযোগ রাহুল গান্ধীর

বিজয় মালিয়ার ২০১৬ সালে ভারত থেকে লন্ডনে পালিয়ে যাওয়ার পেছনে সরাসরি মদত রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তিনি জানতেন কী হতে চলেছিল। শুক্রবার এক ট্যুইট বার্তায় এমনই দাবি করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। এদিন তিনি লিখেছেন, তদন্ত চলাকালীন বিজয় মালিয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই নিজেদের লুক আউট নোটিশে একটি পরিবর্তন করে। মালিয়ার নাম ‘ডিটেইন’ থেকে ‘ইনফর্ম’ ক্যাটাগরিতে আনা হয়। রাহুলের অভিযোগ, সিবিআই যেহেতু সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে রিপোর্ট করে তাই প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া এত হাই প্রোফাইল একটি কেসে, এত টাকার জালিয়াতিতে অভিযুক্ত একজনের লুক আউট নোটিশে এত বড় পরিবর্তন করা হল, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। বিজয় মালিয়ার এই দেশ ছেড়ে পালানোর বিষয়টিকে ‘মহা প্রস্থান’ আখ্যা দিয়েছেন রাহুল। তবে জানা গেছে, মালিয়ার বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশে এই পরিবর্তন করার সময় সিবিআই নাকি যুক্তি দিয়েছিল, প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার ব্যাঙ্ক জালিয়াতিতে অভিযুক্ত এই শিল্পপতি যে দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন তা তাদের মনে হয়নি। তাই আটক করে রাখার পরিকল্পনা থেকে তাঁকে দেশে ফেরার পর রিপোর্ট করতে বলা হয়েছিল। সিবিআইয়ের আরও দাবি,
২০১৫ এর ২৪ নভেম্বর যখন ওই নোটিশে ‘রিপোর্ট অন অ্যারাইভাল’ পরিবর্তনটি আনা হয়, তারপরেও ৯, ১০ ও ১১ ডিসেম্বর বিজয় মালিয়াকে জেরা করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, বুধবার লন্ডনে বিজয় মালিয়ার এক বিস্ফোরক দাবির পরই এই ইস্যুতে ফের উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে জাতীয় রাজনীতি। সেদিন মালিয়া সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সালে দেশ ছাড়ার আগে তিনি সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ যেটলির সঙ্গে দেখা করেছিলেন। মালিয়ার দাবি, তিনি অর্থমন্ত্রীকে মিটমাটের কথা বলেছিলেন এবং তিনি যে লন্ডন যাচ্ছেন তাও জানিয়েছিলেন। মালিয়ার এই বিবৃতি প্রকাশ্যে আসার পরই চাপে পড়ে যায় কেন্দ্র। অর্থমন্ত্রী জানান, ২০১৪ সালের পর তাঁর সঙ্গে বিজয় মালিয়ার মুখোমুখি বসে কোনও বৈঠকই হয়নি। ২০১৬ সালে সংসদে তাঁর সঙ্গে মালিয়ার দেখা হয় বটে, তবে তিনি তাঁকে জানিয়েছিলেন মিটমাটের কথা তাঁকে না বলে যেন, যা বলার বিজয় মালিয়া সরাসরি ব্যাঙ্ককে জানান।
সংবাদমাধ্যম তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করেছে বলে পরে দাবিও করেন বিজয় মালিয়া। কিন্তু এতে কংগ্রেসকে দমানো যায়নি। রাহুল গান্ধী বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, মালিয়ার সঙ্গে অরুণ জেটলির যে সংসদের সেন্ট্রাল হলে ১৫ মিনিট বৈঠক হয়েছিল তা নিজের চোখে দেখেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ এমএল পুনিয়া। যার প্রমাণ সংসদের সিসি টিভি ফুটেজেও রয়েছে। তাই অরুণ জেটলির দাবি ঠিক না। রাহুল প্রশ্ন তুলেছেন, বিজয় মালিয়া যখন খোদ অর্থমন্ত্রীকে লন্ডন যাওয়ার কথা বলেছিলেন বলে দাবি করছেন, তখন কেন সে সময় অরুণ জেটলি বিষয়টি তদন্তকারীদের জানাননি। কংগ্রেসের তরফে গোটা ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত ও অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে।

Comments are closed.