এবার ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করল বিশ্বব্যাঙ্কও, অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ঠেকতে পারে ৬ শতাংশে

মন্দার জেরে ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ঠেকতে পারে ৬ শতাংশে, পূর্বাভাস বিশ্বব্যাঙ্কের।
প্রতি মাসেই নিয়ম করে অটোমোবাইল সেক্টরের খারাপ পরিস্থিতির ছবি নজরে আসছে। বিস্কুট শিল্প থেকে সোনার বাজার সর্বত্র মন্দার ছাপ স্পষ্ট। রাজকোষে ঘাটতি, শেষ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার গত ৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হয়েছে।
কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রে আর্থিক মন্দা যে ভারতকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে কয়েকদিন আগেই তা নিয়ে হুঁশিয়ার করেছিলেন ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ডের (আইএমএফ) প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিভা। জানিয়েছিলেন, বিশ্বব্যাপী মন্দার ধাক্কা সবচেয়ে বেশি পড়বে ভারতের মতো বৃহত্তম উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশে। আইএমএফ প্রধানের পর এবার ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের তরফেও ভেসে এল সাবধানবাণী। শনিবার ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের তরফে পূর্বাভাস ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে ভারতের বৃদ্ধির হার হতে পারে ৬ শতাংশ।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির অর্থনীতি প্রসঙ্গে এক রিপোর্টে ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের পর্যবেক্ষণ, এই নিয়ে পরপর দু’বছর ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার কমছে। ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে ভারতের বৃদ্ধির হার ছিল ৭.২ শতাংশ। সেখান থেকে ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে বৃদ্ধি দাঁড়ায় ৬.৮ শতাংশে।
এদিকে, চলতি অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৯ শতাংশ থেকে নামিয়ে ৬.১ শতাংশে নিয়ে এসেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। কিন্তু ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের পূর্বাভাসে বৃদ্ধির হার আরও দেড় শতাংশ কমেছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের রিপোর্টে বলা হয়েছে, জিএসটি চালু এবং নোটবন্দি, ভারতের গ্রামীণ অর্থনীতি থেকে উচ্চ বেকারত্বের হার এ দেশের অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের সমূহ বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে। প্রথম ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির সূচকের পড়তিই নির্দেশ করছে পুরো আর্থিক বছরে ভারতের বৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের উপরে যাবে না।
কয়েকদিন আগে আরবিআইয়ের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনও মোদী সরকারের নোটবন্দি ও জিএসটি নীতির সমালোচনা করেছিলেন। বলেছিলেন, জিএসটি ও নোটবন্দি এমন সময় হয়েছিল যখন ভারতীয় অর্থনীতি ইতিমধ্যেই দুর্বল। প্রায় একই সুর শোনা গেল ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের রিপোর্টেও।
তবে ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক এও জানিয়েছে, মনিটরি পলিসিতে নজর দিলে ২০২১ সালের মধ্যে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি ৬.৯ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে এবং ২০২২ সালে তা ৭.২ শতাংশে পৌঁছতে পারে।

Comments are closed.