চূড়ান্ত রাজনৈতিক ডামাডোল পরিস্থিতির মধ্যেই, তৃতীয় বারের জন্য কর্ণটকের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন বিজেপির বিএস ইয়েদুরাপ্পা। বৃহস্পতিবার সকালে ৯টায় তাঁকে রাজভবনে শপথ বাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল ভাজুভাই ভালা। ইয়েদুরাপ্পা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে এদিন শপথ নিলেও তাঁর মন্ত্রিসভা এদিন গঠিত হয়নি। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দেওয়ার পরই মন্ত্রিসভা গঠন করতে পারবে বিজেপি। সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য বিজেপি’কে ১৫ দিনের সময় দিয়েছেন রাজ্যপাল।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী পদে ইয়েদুরাপ্পার শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে কর্ণাটকে অভূতপূর্ব রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। সরকার গড়ার দাবি জানিয়ে বুধবার সকালে রাজ্যপালের কাছে দরবার করেছিল বিজেপি। তাদের দাবি, একজন নির্দলসহ তাদের কাছে মোট ১০৫ জন বিধায়কের সমর্থন আছে। একই দাবি নিয়ে বুধবার বিকেলে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস-জেডিএস জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী এইচডি কুমারস্বামী। জোটের পক্ষে থাকা ১১৭ জন বিধায়কের স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি তুলে দেওয়া হয় রাজ্যপালের কাছে। এরপর সকলেই তাকিয়ে ছিলেন রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের দিকে। সর্বাধিক আসন জেতা বিজেপি’কে, নাকি সর্বাধিক বিধায়কের সমর্থন থাকার দাবি করা কংগ্রেস-জেডিএস জোট, কাকে আগে ডাকবেন রাজ্যপাল ভালা। বুধবার রাতের দিকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণের জন্য বিজেপি’র বিএস ইয়েদুরাপ্পাকে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল।
এখবর জানাজানি হতেই চূড়ান্ত নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। গভীর রাতে দেশের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস। রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত ‘সংবিধান বিরোধী, বলে দাবি করে কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি সুপ্রিম কোর্ট আবেদন জানান, যাতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চকে নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার শুনানির পর রাতেই কংগ্রেসর করা আবেদন খতিয়ে দেখে তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, তারা রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দিচ্ছেন না। আবেদনের পরবর্তী শুনানি শুক্রবার হবে বলেও বিচারপতিরা জানান। সেই মতো বৃহস্পতিবার সকালে শপথ নেন ইয়েদুরাপ্পা।
এদিকে বিষয়টিকে নিয়ে সম্মুখ সমরে নেমেছে কংগ্রেস-বিজেপি দুই দলেরই শীর্ষ নেতৃত্ব। ট্যুইট করে, এই ঘটনাকে গণতন্ত্রের পরাজয় বলে দাবি করেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও। রাহুল গান্ধী’কে জরুরি অবস্থার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তাঁর পাল্টা ট্যুইট, গণতন্ত্রের হত্যা তখন হয়েছিল যখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়েও, কর্ণাটকের ভালো না ভেবে কেবল নিজেদের সুবিধার জন্য জেডিএস’কে সমর্থনের কথা জানিয়েছিল কংগ্রেস। ইয়েদুরাপ্পার শপথ গ্রহণের প্রতিবাদে ধর্ণায় বসার পরিকল্পনা নিয়েছেন কর্ণাটকের বিরোধী বিধায়কেরা।