যোগেন্দ্র যাদব: দেশের মানুষ একদিন বিজেপির এই ঔদ্ধত্যের জবাব দেবে

সমাজ কর্মী এবং মানবাধিকার নিয়ে লড়াই করা যোগেন্দ্র যাদব সম্প্রতি কলকাতায় আসেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিকত্ব আইন, এনপিআর, এনআরসি বিরোধী সভায় যোগ দেন তিনি। তাঁর মুখোমুখি thebengalstory.com
প্রশ্নঃ প্রধানমন্ত্রী বলছেন এনআরসি, এনপিআর এবং সিএএ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। কী বলবেন এই বিষয়ে?
উত্তরঃ তাই যদি হয়, তাহলে আপাতত এনপিআর এবং সিএএ সরকার স্থগিত করে দিক। এক বছরের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হোক গোটা প্রক্রিয়া। সরকার মানুষকে বোঝানোর দায়িত্ব নিক। সেটা কেন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করছেন না?
প্রশ্নঃ আপনি বলছেন এনপিআর, সিএএ স্থগিত করে দেওয়া হোক। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সিএএ নিয়ে এক ইঞ্চিও পিছু হঠা হবে না। কী বলবেন?
উত্তরঃ দেশের মানুষের মধ্যে এই বিষয়গুলি নিয়ে ভয় এবং সংশয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। কিন্তু সরকার সেইগুলি দূর করার কোনও প্রচেষ্টাই করছে না। এ বিষয়ে কোনও সদিচ্ছা এই সরকারের নেই। তাই দ্রুত সিএএর বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেওয়া হল।
প্রশ্নঃ আপনার কি মনে হয়, সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্যই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে?
উত্তরঃ অবশ্যই। উদ্ধত এই সরকার ভেবেই নিয়েছে, আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে যা খুশি করতে পারি। কিন্তু গণতন্ত্রে শুধুমাত্র সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতাই যথেষ্ট নয়। সরকারের উচিত জনগণকে সঙ্গে নিয়ে চলা। একদিন মানুষ এই ঔদ্ধত্যের জবাব দেবে।
প্রশ্নঃ রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, এ রাজ্যের প্রতিবাদীদের তাড়া করে গুলি করে মারা উচিত অসম, উত্তরপ্রদেশের মতো।
উত্তরঃ দিলীপ ঘোষের যা ভাষাজ্ঞান, অত নীচে আমি নামতে পারব না। কিন্তু ওদের এই ভাষাই মাঝে মাঝে আসল সত্যিটা সামনে নিয়ে আসে, যা বিজেপি লুকোতে চায়। দেশের মানুষ এবং প্রতিবাদীদের ওরা এই চোখেই দেখে। এর বিরুদ্ধেই আজ মানুষ পথে নেমেছে।
প্রশ্নঃ আপনি সম্প্রতি পার্ক সার্কাসে মহিলাদের অবস্থান মঞ্চে গিয়েছিলেন। কী মনে হল?
উত্তরঃ মহিলারা এভাবে এগিয়ে এসেছেন। এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। দিল্লির শাহিনবাগ, এখানকার পার্ক সার্কাস, এলাহাবাদ, কানপুরেও এরকম অবস্থান বিক্ষোভে বসছেন মহিলারা, এটা সামাজিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত এবং গর্বের বিষয় বটে।
প্রশ্নঃ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বেলুড় মঠে গিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখার অভিযোগ উঠেছে, কী বলবেন?
উত্তরঃ উনি বেলুড়ে গিয়ে মিথ্যে ভাষণ না দিয়ে যদি স্বামী বিবেকানন্দের সব লেখে সময় করে পড়তেন, কাজে দিত। কিন্তু উনি মনে হয় তা পড়েন না।
প্রশ্নঃ গত ৫ জানুয়ারি জেএনইউ-এর ঘটনার পর আপনি ওখানে গেলে আপনার উপর হামলা হয়, ঠিক কী ঘটেছিল?
উত্তরঃ ওই ঘটনার পর গোটা এলাকার আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ বিজেপির গুন্ডাদের পাহারা দিচ্ছিল, আর গুন্ডারা পুলিশকে মিডিয়ার হাত থেকে বাঁচাচ্ছিল। আমার উপর যখন হামলা হয়, তখন দু’হাত দূরে দাঁড়িয়ে দেখছিল পুলিশ। তারা নির্বিকার ছিল।

Comments are closed.