উনি আর কাজ পাবেন না, আমার সুযোগ আছে, মোদীকে ট্যুইট করে অমিত শাহকে খোঁচা পদত্যাগী IAS অফিসারের

কেন পদত্যাগ প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে না? প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে ট্যুইট পদত্যাগী আইএএস অফিসার গোপীনাথনের

জম্মু-কাশ্মীরের থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপের প্রেক্ষিতে ‘কয়েক লক্ষ মানুষের মৌলিক অধিকার খর্ব হয়েছে,’ এই দাবি করে গত বছর আইএএস পদ ছেড়েছিলেন কন্নন গোপীনাথন। কিন্তু সেই ইস্তফা এখনও গৃহিত না হওয়ায় এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্ধৃত করে ট্যুইটারে অমিত শাহকে তীব্রভাবে বিঁধলেন পদত্যাগী আইএএস অফিসার।
শনিবার এক ট্যুইটে কন্নন গোপীনাথন লেখেন, প্রিয় প্রধানমন্ত্রী দয়া করে আমার পদত্যাগ প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য অমিত শাহকে বলুন। অথবা, আপনি তাঁর পদত্যাগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করুন। এরপরেই শাহকে কটাক্ষ করে পদত্যাগী আইএএস অফিসার আরও লেখেন, ‘আমার একটা সুযোগ থাকলেও থাকতে পারে। তবে নিশ্চিতভাবে উনি আর কোনও কাজ পাবেন না।’

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বানভাসি কেরলে পরিচয় লুকিয়ে মুটেগিরি করে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন কন্নন গোপীনাথন। পরে ২০১২ ব্যাচের কেরলের এই আইএএস অফিসারের পরিচয় প্রকাশ্যে আসার প্রেক্ষিতে অনুপ্রেরণার পাত্র হয়ে ওঠেন তিনি। এহেন কান্নন ২০১৯ সালে কেন্দ্রের জম্মু-কাশ্মীর নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে জানিয়ে ইস্তফা দেন। গত অগাস্ট মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে তাঁর ইস্তফাপত্র পাঠান দাদরা ও নগর হাভেলীতে পাওয়ার অ্যান্ড নন কনভেনশনাল এনার্জি সোর্স বিভাগে সেক্রেটারির দায়িত্বে থাকা গোপীনাথন।
সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন মতপ্রকাশের অধিকার ফিরে পেতেই কাজে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। বলেছিলেন, ”ভবিষ্যতে কেউ আমাকে প্রশ্ন করে বসল, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র যখন একটা গোটা রাজ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাল, সেখানকার মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিল, সেইসময় আপনি কী করছিলেন? এমন পরিস্থিতি এলে কমপক্ষে এটা তো বলতে পারব যে, প্রতিবাদে চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছিলাম।”
এরপর কেন্দ্রের একাধিক নীতির প্রতিবাদ জানাতে তিনি রাজ্যে রাজ্যে ঘুরে সভা করছেন। এমনকি কেন্দ্রের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ করায় গত ডিসেম্বরে পুলিশের হাতে আটকও হন প্রাক্তন আইএএস অফিসার। তবে অতিমারি করোনা পরিস্থিতিতে তাঁকে দ্রুত কাজে যোগ দিতে বলা হলেও তা অস্বীকার করেন তিনি। এই প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে প্রশাসন পক্ষ। সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারায় থানায় এফআইআর দায়ের হয়। যদিও সরকারের বিরুদ্ধে পাল্টা তাঁকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কন্নন। বলেন, অতিমারি পরিস্থিতিতে তিনি স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে মানুষকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু আইএএস পদে আর ফিরবেন না। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, অগাস্টে ইস্তফা দেওয়ার পরেই তাঁর স্যালারি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু ইস্তফা প্রক্রিয়া শেষ না করে তা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে!
এই প্রেক্ষিতে এদিন চাঁচাছোলা ভাষায় অমিত শাহকে বিঁধে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ট্যুইট করলেন পদত্যাগী আইএএস অফিসার কন্নন গোপীনাথন।

Comments are closed.