গত ২ বছরে কাজ হারিয়েছেন ৫০ লক্ষ, নোটবন্দির পরই শুরু প্রবণতা, বলছে নতুন রিপোর্ট

সম্প্রতি এনএসএসও-র রিপোর্টে উঠে এসেছিল, গত সাড়ে ৪ দশকে দেশে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে বেকারত্বের সংখ্যা। কিন্তু ওই রিপোর্ট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি কেন্দ্র। একটি ইংরেজি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল এনএসএসও-র কর্মসংস্থান-রিপোর্ট। যা নিয়ে মোদী সরকারের দিকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছিল বিরোধীরা। এবার বেঙ্গালুরুর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টে উঠে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২০১৬-এর নভেম্বরে নোটবন্দির পর থেকে কেটে গিয়েছে দু বছরেরও বেশি সময়। এই সময়ের মধ্যে সারা দেশে প্রায় ৫০ লক্ষ পুরুষ কাজ হারিয়েছেন। মহিলাদের ধরলে সংখ্যাটি আরও বাড়বে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

বেঙ্গালুরুর আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্য সেন্টার ফর সাসটেনেবল এমপ্লয়মেন্ট (সিএসই) মঙ্গলবার তাদের প্রকাশিত রিপোর্টে জানাচ্ছে, ২০১৬-এর নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নোটবন্দির ঘোষণার পর দু’বছরে প্রায় ৫০ লক্ষ পুরুষ কাজ হারিয়েছেন।
তবে ‘স্টেট অব ওয়ার্কিং ইন্ডিয়া ২০১৯’ শীর্ষক ওই রিপোর্টে নোটবন্দির ফলেই যে এত মানুষ কাজ হারিয়েছেন, সরাসরি তা দাবি করা না হলেও, ঘটনাচক্রে ২০১৬ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর নোটবন্দির ঘোষণার পর থেকে কর্মহীন হয়ে পড়েন বিশাল সংখ্যক মানুষ, বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১১ সাল থেকে কর্মসংস্থানের গ্রাফ ক্রমশ নিম্নমুখী হলেও শেষ দু’বছরে তা মাত্রা ছাড়িয়েছে, বলে রিপোর্টে উল্লেখ। পাশাপাশি, ইনফর্মাল সেক্টরগুলি, যেখানে অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিত মানুষের একটা বড় অংশ কর্মরত, তাঁদের ওপর জিএসটি ও নোটবন্দির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে সিএসই-র রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হচ্ছে, ২০১১ সাল থেকে বেকারত্ব বাড়ছিল, যার মধ্যে একটা বড় অংশ উচ্চ শিক্ষিত যুবকরা। তবে শুধু উচ্চ শিক্ষিতরাই নয়, অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিতদের মধ্যেও কাজের সুযোগ কমে আসছিল বলেও দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। ২০১৬ সালের পর থেকে অসংগঠিত ক্ষেত্রে প্রচুর অর্ধ শিক্ষিত ও নিরক্ষর মানুষ কাজ হারিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থান নিয়ে নতুন করে ভাবনা-চিন্তা জরুরি বলে মনে করছেন সিএসই-এর গবেষকরা।
কিছুদিন আগেই ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভের অপ্রকাশিত রিপোর্ট প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করেছিল ইংরেজি সংবাদপত্র দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। সেই রিপোর্টে উঠে এসেছিল, ২০১৭-২০১৮ সালে দেশের বেকারত্বের হার ৬.১ শতাংশ ছুঁয়েছে। যা ১৯৭২-৭৩ সালের পর সর্বোচ্চ। যদিও এই রিপোর্টের তথ্য যাচাই করা হয়নি বলে মন্তব্য করেছিলেন নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান।
এই প্রেক্ষিতেই ‘সেন্টার ফর সাসটেনেবল এমপ্লয়মেন্ট’-এর সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে নতুন করে উঠে এল কয়েক বছর ধরে দেশের বেকারত্বের সামগ্রিক চিত্র।

 

Comments are closed.