অ্যামাজন-ফ্লিপকার্টের পার্বণী ছাড়ের বিরুদ্ধে কেন্দ্রকে নালিশ দেশের অন্যতম ব্যবসায়ী সংগঠনের

সম্মুখ সমরে ই-টেলার বনাম রিটেলার। একেই গতি হারিয়েছে অর্থনীতি। মানুষের হাতে খরচ করার টাকা বাড়ন্ত। এই প্রেক্ষিতে অ্যামাজন, ফ্লিপকার্টের অনলাইন পার্বণী ছাড়, রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে দেশের অফলাইন খুচরো ব্যবসায়ীদের। ভারতে রিটেলারদের অন্যতম বড় সংগঠন কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (সিএআইটি) এই মর্মে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে, অ্যামাজন-ফ্লিপকার্টের উৎসব সেল দেশের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘন করছে।

গণেশ চতুর্থী থেকে ভারতের ফেস্টিভ্যাল সিজন শুরু। চলবে জানুয়ারি পর্যন্ত। লক্ষ্য করা গিয়েছে, গাড়ি থেকে মোবাইল, সোনার গয়না কিংবা ট্রেন্ডি জামা-কাপড়, এই সময় ভারতীয়রা হাত খুলে খরচ করেন। এই অংশের ক্রেতাদের টানতে প্রতি বছরই বিশাল ছাড়ের সম্ভার নিয়ে হাজির হয় অনলাইন ই-টেলার অ্যামাজন-ফ্লিপকার্ট। ১০ শতাংশ থেকে শুরু করে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয় মূলত এই দুই সাইটে। গত বছর পর্যন্ত যেখানে ই কমার্স সংস্থাগুলোর সঙ্গে সেয়ানে সেয়ানে লড়া গিয়েছেন ভারতের অফলাইন খুচরো ব্যবসায়ীরা, সেখানে এবার সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র। অর্থনীতি গোত্তা খাওয়ার জেরে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা গিয়েছে কমে। ফলে বিক্রি কমেছে লক্ষণীয়ভাবে। বাজারে চাহিদার প্রবল অভাব। এই সময় অ্যামাজন-ফ্লিপকার্ট বিশাল ছাড় নিয়ে এলে আক্ষরিক অর্থেই বিপাকে পড়বেন দেশের বাকি ব্যবসায়ীরা। তাই এবার কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।

দেশজুড়ে ৫ লক্ষেরও বেশি সদস্য রয়েছে সিএআইটির। তাঁদের দাবি, এফডিআই বিধি লঙ্ঘন করে ই কমার্স সংস্থাগুলো ব্যাপক ছাড়ের সুযোগ করে দিলে বাজার তার ভারসাম্য হারাবে। তৈরি হবে একচেটিয়া কারবার। পথে বসবেন লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তাই সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিক। বাণিজ্য মন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে এই আবেদন জানানো হয়েছে। উল্টোদিকে অ্যামাজন ইন্ডিয়া কিংবা ওয়ালমার্টের ফ্লিপকার্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছে। ২৯ শে সেপ্টেম্বর থেকে ফ্লিপকার্ট শুরু করছে তার বাৎসরিক ছাড়। অ্যামাজন ইন্ডিয়া ক’দিনের মধ্যেই দিন ঘোষণা করতে চলেছে বলে খবর।

ই-টেলার জায়ান্ট অ্যামাজন ইন্ডিয়া এবং ফ্লিপকার্টের পাল্টা দাবি, তাদের সঙ্গে রয়েছেন দেশের অন্তত ৫ লক্ষ ছোট ব্যবসায়ী, স্বনির্ভর মহিলা উদ্যোগ কিংবা কুটিরশিল্পী। ফেস্টিভ্যাল ছাড়ের মাধ্যমে তাঁদের ব্যবসা আরও বাড়িয়ে তোলাই মূল লক্ষ্য। ফলে দেশের ছোট ব্যবসায়ীদের স্বার্থেই এর বিরোধিতা করা উচিত নয়।

দ্য ইকনমিক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ইঙ্গিত, ব্যবসায়ী সংগঠনের পাঠানো চিঠির প্রেক্ষিতে তাড়াহুড়োর পক্ষপাতী নয় কেন্দ্র। এবিষয়ে একটি নির্দিষ্ট বিধি আনার ব্যাপারে চিন্তাভাবনাও শুরু হয়েছে। তবে তা কোনওভাবেই এবারের উৎসবের মরসুমে লাগু হবে না বলেই সূত্রের খবর।

Comments are closed.