রাত পোহালেই অসমে এনআরসি প্রকাশ, নাম থাকবে কি? প্রবল উৎকণ্ঠায় অসমের ৪১ লক্ষ মানুষ, রাজ্যজুড়ে কড়া নিরাপত্তা

রাত পোহালেই ৩১ শে অগাস্ট। অসম নাগরিকপঞ্জি প্রকাশের দিন। চরম উৎকণ্ঠায় অসমের ৪১ লক্ষ মানুষ। নাম আছে না নেই, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাতে দু’চোখের পাতা এক করতে পারছেন না তাঁরা। বিদেশি তকমা পড়ার আশঙ্কা যেন সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে। চারদিকে কী হয়, কী হয় ভাব।

তালিকায় নাম না দেখতে পেয়ে উত্তেজনার বশে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে যায় তার জন্য তৈরি অসমের পুলিশ প্রশাসন। এছাড়াও আরও ৫৫ কোম্পানি আধাসেনা পাঠানো হয়েছে অসমে। পুলিশ প্রশাসনের তরফে চলছে প্রচার, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল নিজে বিবৃতি দিয়েছেন, আর্জি জানিয়েছেন শান্তি বজায় রাখার। কিন্তু তাও নিশ্চিন্ত হতে পারছে না অসম। একদিকে রাজ্যের ৪১ লক্ষ মানুষ অনিশ্চয়তায় নাগরিকত্ব নিয়ে, অন্যদিকে প্রশাসনের চ্যালেঞ্জ পরিস্থিতি শান্ত রাখার। ৩১ শে অগাস্ট অসমের ইতিহাসে শুরু হতে চলেছে এক নতুন পর্ব।

শনিবার সকাল ১০ টায় এনআরসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে নাগরিকপঞ্জি। সেখানে এক ক্লিকেই দেখে নেওয়া যাবে নাম আছে, কি নেই। পাশাপাশি যাঁদের মোবাইলে ইন্টারনেট সংযোগ নেই, তাঁরা এনআরসি সেবা কেন্দ্রে গিয়ে ম্যানুয়ালি জানতে পারবেন।

২০১৮ সালের  ৩০ জুলাই এনআরসির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশিত হয়। তখন সেই খসড়া তালিকায় ৩ কোটি ২৯ লক্ষের মধ্যে বাদ পড়েছিলেন ৪০ লক্ষ ৭ হাজার ৭০৭ জন। এবার কী হবে, তা নিয়েই এখন আলোচনা অসমের আনাচেকানাচে। যদিও বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে ফের জানানো হয়েছে, যাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়বে, তাঁরা ফরেনার্স ট্রাইবুনালে আবেদন করতে পারবেন। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, এনআরসি থেকে নাম বাদ যাওয়া মানেই তিনি বিদেশি, এমনটা মোটেও নয়। কিন্তু তবুও উৎকণ্ঠা যেন বাঁধ মানছে না।

প্রশাসন জানে এই উৎকণ্ঠাই এক সময় বদলে যেতে পারে রাগ এবং ক্ষোভে। তাই যে কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোনও ত্রুটি রাখছে না তারা। যদিও অসম পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার এনআরসি সংক্রান্ত কোনও গোলমালের আশঙ্কা করা হচ্ছে না। গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে ২৯ তারিখ থেকেই পর্যায়ক্রমে ১৪৪ ধারা জারি করে রাখা হয়েছে গুয়াহাটি এবং দিসপুরের কয়েকটি স্পর্শকাতর এলাকায়। তবে শনিবার কোনও গোলমালের সম্ভাবনা নেই বলেই জানাচ্ছেন অসম পুলিশের বড় কর্তারা। অসম পুলিশের ডিজি কুলাধার সইকিয়া বলছেন, ২০১৮ সালের খসড়া তালিকায় ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষের নাম বাদ পড়েছিল। কিন্তু সেই সময়ও অসম শান্ত ছিল। এবারও তাই হবে। অসমে কোনও অশান্তি হবে না।

Comments are closed.