২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি বেড়েছে ১৫ শতাংশ, মোট পরিমাণ ৭১,৫৪৩ কোটি, জানাল আরবিআইয়ের রিপোর্ট

নোটবন্দি কিংবা জিএসটি চালুর পর কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি ছিল, এতে সামগ্রিকভাবে দুর্নীতি রোধের পাশাপাশি ব্যাঙ্ক জালিয়াতির সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে কমবে। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সাম্প্রতিক বার্ষিক রিপোর্ট সম্পূর্ণ অন্য কথা বলছে। যে রিপোর্টে অস্বস্তি বাড়ছে কেন্দ্রের অন্দরে।

২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনা বেড়েছে ১৫ শতাংশ। বলছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার বার্ষিক রিপোর্ট। ২০১৯ আর্থিক বছরে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে মোট ৬,৮০১ টি জালিয়াতির অভিযোগ রুজু হয়েছে। জালিয়াতির মোট অঙ্ক ৭১,৫৪২.৯৩ কোটি টাকা। গতবার অর্থাৎ ২০১৭-১৮ সালে ৫,৯১৬ টি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল, যার মোট অঙ্ক ছিল ৪১১৬৭.০৪ কোটি টাকা। আরবিআইয়ের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাঙ্ক জালিয়াতির পরিমাণ সর্বাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলোতে। তারপর যথাক্রমে বেসরকারি ব্যাঙ্ক এবং বিদেশি ব্যাঙ্ক।

এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তি বেড়েছে মোদী সরকারের।

আরবিআইয়ের রিপোর্টে প্রকাশ, এর মধ্যে কার্ড ও ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে জালিয়াতি হয়েছে ০.৩ শতাংশ। এক লক্ষ টাকা বা তার কম আর্থিক পরিমাণের জালিয়াতির ঘটনা মাত্র ০.১ শতাংশ। অর্থাৎ সিংহভাগ ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগই বড় অঙ্কের। বিশেষত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলিই ব্যাঙ্ক জালিয়াতির বড় শিকার বলে জানিয়েছে আরবিআই।
চলতি আর্থিক বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে ৩ হাজার ৭৬৬ টি আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে, যার পরিমাণ প্রায় ৬৪ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা। তারমধ্যে ১০০ কোটি টাকার উপর ব্যাঙ্ক জালিয়াতির পরিমাণ ৫২ হাজার ২০০ কোটি টাকা। আরবিআইয়ের রিপোর্ট বলছে, জালিয়াতি হয়েছে তা বুঝতেই ব্যাঙ্কগুলোর লেগে গিয়েছে কমবেশি ৫৫ মাস সময়।
ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনার তদন্ত করতে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সির ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে আরবিআই। সেইসঙ্গে পরবর্তীকালে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও চিন্তা করছে দেশের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক। তবে বর্তমান আর্থিক বছরের ব্যাঙ্ক জালিয়াতির পরিমাণ যে মোদী সরকারকে নয়া অস্বস্তিতে ফেলছে, তা বলাই বাহুল্য।

Comments are closed.