বেঙ্গালুরুতে মেট্রোর কাজে কাটা পড়ল ১,২০০ রও বেশি গাছ, অনুমতি ছাড়াই চলছে সবুজ নিধন, অভিযোগ পরিবেশবিদদের

কাজ চলছে মেট্রো সম্প্রসারণের, তাই নির্বিচারে সবুজ নিধন বেঙ্গালুরুতে। বেঙ্গালুরু শহরে মেট্রোর দ্বিতীয় দফার কাজে কাটা পড়ল ১,২০০ রও বেশি গাছ। অভিযোগ, হাইকোর্টের নির্দেশিকা অগ্রাহ্য করে, পরিবেশবিদদের কমিটির সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই একের পর এক গাছ কেটে চলেছে বেঙ্গালুরু মেট্রো রেল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (বিএমআরসিএল)।
বিএমআরসিএলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মেট্রোর দ্বিতীয় দফার কাজে ইতিমধ্যেই ১,২৫৩ টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। বেশ কয়েকটি এলাকার বৃক্ষ ছেদনের তথ্যে দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। মেট্রো কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য বলছে, বেঙ্গালুরুর আরভি রোড থেকে বোম্মাসান্দ্রা পর্যন্ত ৫৯৯ টি গাছ কাটা হয়েছে, পরে অতিরিক্ত ২৬৯ টি গাছ কাটা হয়। এছাড়া গোত্তিগেরে-নাগাওয়াড়া লাইনে কাটা হয়েছে ৩৮৫ টি গাছ।
পরিবেশবিদ বিজয় নিশান্থের দাবি, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে সবুজ নিধনের কর্মকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। তাঁর দাবি, প্রথম দফায় বিএমআরসিএলকে ৪৫ টি গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছিল পরিবেশ সংক্রান্ত কমিটি। যদি ৫০ টির কম গাছ কাটা হয় সেক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হয় না। কিন্তু দ্বিতীয় দফার শেষে যেভাবে বিপুল সংখ্যক গাছ কাটা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অনৈতিক বলে অভিযোগ করছেন পরিবেশবিদরা।
বেঙ্গালুরুর বৃক্ষ ছেদনের বিষয় নিয়ে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কর্ণাটক হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে পরিবেশবিদদের নিয়ে বিবিএমপি কমিটি গড়া হয়। কোনও কাজের জন্য বিবিএমপি কমিটি যদি মনে করে গাছ কাটা যাবে, তবেই অনুমতি মিলতে পারে। কিন্তু বেঙ্গালুরু মেট্রো রেল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন লিমিটেড কোনও আলোচনা বা অনুমতির ধার ধারেনি বলে অভিযোগ। অন্যদিকে, বিবিএমপি সূত্রে খবর, তারা কেবল ১৭০ টি গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষকে। প্রশ্ন উঠছে, তবে কীভাবে সমস্ত নিয়ম অগ্রাহ্য করে নগরোন্নয়নের নামে একের পর এক গাছ কাটা পড়ছে?
কিছুদিন আগেই মহারাষ্ট্রে মুম্বই-নাগপুর এক্সপ্রেসওয়ে বানানোর জন্য ২ লক্ষের বেশি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। খরা প্রবণ বিদর্ভ, মারাঠাওয়াড়ায় এত সংখ্যক গাছ কাটায় প্রশ্নের মুখে পড়েছিল মহারাষ্ট্র সরকার। বুলেট ট্রেন করিডোর তৈরির সময়ও ব্যাপক ম্যানগ্রোভ নিধনের পরিকল্পনার প্রেক্ষিতে আপত্তি তোলেন সাধারণ মানুষ ও পরিবেশবিদরা। এবার নির্বিচারে গাছ কাটার অভিযোগ উঠল কর্ণাটকের রাজধানীতে।

যদিও বিএমআরসিএলের সাফাই, শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় আড়াই হাজার বৃক্ষরোপন করেছে তারা।

Comments are closed.