কার্লসবার্গ ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে এদেশের সরকারি আধিকারিককে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ, ড্যানিশ সংবাদপত্রে বিস্ফোরক প্রতিবেদন

দুনিয়ার অন্যতম সেরা বিয়ার প্রস্তুতকারক সংস্থা কার্লসবার্গের ভারতীয় শাখার বিরুদ্ধে সরকারি আধিকারিকদের ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ। চাঞ্চল্যকর এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়েছে ডেনমার্কের সংবাদপত্র বার্লিঙস্কিতে। সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, প্রায় ১৮ মাস ধরে টেবিলের তলায় লেনদেন চলেছিল। তাতে যুক্ত ছিলেন বিয়ার প্রস্তুতকারী সংস্থার ভারতীয় শাখার শীর্ষ কর্তারা। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরই কার্লসবার্গ ইন্ডিয়াকে গোটা প্রক্রিয়া অডিট করার নির্দেশ দিয়েছে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে কার্লসবার্গের সদর দফতর।

লাল ফিতের ফাঁস এড়িয়ে বাড়তি সরকারি সুযোগ সুবিধা আদায় এবং ভারতে কার্লসবার্গের ব্রিউয়ারি তৈরিতে দ্রুত সরকারি ছাড়পত্র পেতে ঘুষ দেওয়া হয়েছিল বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ। পাশাপাশি সরকারি বিধিনিষেধে শিথিলতার দাবি ভারতীয় শাখার পক্ষ থেকে সরকারি আধিকারিকদের পেশ করা হয়েছিল। যে সমস্ত আধিকারিকদের ঘুষ দেওয়া হয়েছিল বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই আবগারি কিংবা অনুমতি প্রদানকারী দফতরের শীর্ষপদে কর্মরত ছিলেন।

ড্যানিস সংবাদপত্রটির দাবি, এই লেনদেনের পুরো তথ্য এবং প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে। সেই তথ্য প্রমাণ বলছে, ২০১৫ থেকে ২০১৬ এর মধ্যে সরকারি অফিসারদের ২০০ টিরও বেশি নগদ লেনদেনের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হয়েছে।

কার্লসবার্গের মিডিয়া ডিরেক্টর ক্যাসপার এলবজ়র্ন বিবৃতি প্রকাশ করে বলেন, ঘুষের অভিযোগ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি নথি যা সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্রের কাছে রয়েছে বলে দাবি, তার বেশকিছু কার্লসবার্গের কাছেও রয়েছে। তাঁর দাবি, কার্লসবার্গ ইন্ডিয়ার এক প্রাক্তন কর্মীর সূত্রে সংবাদপত্র এই খবর পায়। প্রাক্তন ওই ভারতীয় কর্মীর দাবি ছিল, তাঁকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করা হয়।

প্রাক্তন ওই কর্মী সংস্থার কাছে ২ মিলিয়ন ডলার দাবি করে। ২ মিলিয়ন ডলার না পেলে ঘুষের খবর প্রকাশ্যে আনার হুমকি পর্যন্ত দেন ওই কর্মী বলে অভিযোগ এলবজ়র্নের। এরপরেই ড্যানিশ বিয়ার প্রস্তুতকারক সংস্থা ঘটনার তদন্তে নামে। দেখা যায়, ওই ভারতীয় কর্মীকে মোটেই বরখাস্ত করা হয়নি, বরং তিনি নিজের ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে সংস্থার নিয়ম মেনেই সব কাজ হয়েছে। গোটা ঘটনা পর্যালোচনার পর কার্লসবার্গ যদিও জানিয়ে দিয়েছে, এই মুহূর্তে ঘুষের অভিযোগ প্রমাণ করার কোনও উপায় নেই। পাশাপাশি ড্যানিশ সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে কার্লসবার্গের অভিযোগ, বার্লিঙস্কির কাছে যা তথ্য প্রমাণ আছে, তা পুরোপুরি তাদের হস্তান্তর করা হয়নি। তবে এই কারণে ঘুষের অভিযোগ প্রমাণযোগ্য নয় বলে বিয়ার সংস্থা দাবি করছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।

বার্লিঙস্কি তার প্রতিবেদনে আরও ৩ টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অথচ অজ্ঞাতপরিচয় সূত্রের উল্লেখ করেছে। যাঁরা বলেছেন, কার্লসবার্গ ইন্ডিয়ার সঙ্গে ভারতের সরকারি আধিকারিকদের গোপন অর্থ লেনদেন হয়েছিল।

Comments are closed.